তবে কি এবার বিজেপি শিবিরে সেলুলয়েডের ‘কাকাবাবু’? প্রসেনজিৎকে শাহ্কে নিয়ে লেখা বই উপহার বিজেপি নেতার
কিছুদিন আগেই রিহানা, গ্রেটার বিরুদ্ধে মুখ খুলে কেন্দ্রীয় সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন প্রসেনজিৎ ঘরনী অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়। আর এবার সরস্বতী পুজোর সন্ধ্যায় ভোটের বাংলায় গুঞ্জন উঠলো খোদ ‘ইন্ডাস্ট্রি’ই এবার নাকি বিজেপি শিবিরে যেতে পারেন। অর্থাৎ প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের গেরুয়া শিবিরে আগমন হতে পারে বলে ধারণা করছে বিশষজ্ঞ মহল।
তবে কেনও এই মনে হওয়া?
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম মাথা অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে যান বিজেপি নেতা অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়। দু’জনের মধ্যে কিছুক্ষণ কথাবার্তা হয়। সেই সঙ্গে প্রসেনজিৎকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ্কে নিয়ে লেখা নিজের বই ‘অমিত শাহ অ্যান্ড দ্য মার্চ অফ বিজেপি’ উপহার দেন। কোনওরকম জড়তা ছাড়াই ক্যামেরার সামনে হাসিমুখে পোজও দেন দু’জনে।
আর প্রসেনজিৎ-অনির্বাণের এই সাক্ষাতের বিষয়টি সামনে আসার পরই তুঙ্গে উঠেছে জল্পনা। যদিও বিজেপির এক শীর্ষনেতার দাবি, নেহাতই সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য অভিনেতার বাড়িতে গিয়েছিলেন অনির্বাণ। এখানে কোনও রাজনৈতিক রং খোঁজার দরকার নেই। সেই ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ নিয়ে প্রসেনজিতের কোনও প্রতিক্রিয়া না মিললেও গুঞ্জন ক্রমশ বাড়ছে।
টলিউডের উপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একচ্ছত্র অধিকার আমাকে এখন তৎপর বিজেপি শিবির। মিমি, নুসরাত, দেব, শতাব্দী, দেবশ্রী সহ টলিউডের এক ঝাঁক তারকা এখন তৃণমূলের হয়ে সাংসদ পদপ্রাপ্ত। সেই জায়গায় বিজেপির হাতে গুটি কয়েক জন আছেন।
আর তাই টলিউডে অধিকার বিস্তারে বিজেপির তালিকায় এখন বড় বড় ‘মাথা’-রাও রয়েছেন বলে খবর। একইসঙ্গে সম্প্রতি একাধিকবার বিজেপির ‘কাছাকাছি’ এসেছেন প্রসেনজিৎ। যদিও প্রকাশ্যে কখনও সক্রিয় রাজনীতিতে যোগদানের ইচ্ছাপ্রকাশ করেননি টলিউডের এই তাবড় অভিনেতা।
২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আবহের মধ্যেই যখন দিল্লিগামী বিমানে বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল প্রসেনজিতের। তখনও তাঁর বিজেপিতে যোগদান নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়।
আর সেই মোক্ষম সময়ই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রসেনজিতের দূরত্ব তৈরি হয়। কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের চেয়ারম্যান পদ থেকে প্রসেনজিৎকে ‘অপসারণ’ করা হয়। সেই পদ তুলে দেওয়া হয় মমতা ঘনিষ্ঠ পরিচালক রাজ চক্রবর্তী’র হাতে।
সেইসবের মধ্যেই এই বছর ২৩শে জানুয়ারি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তীতে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে সরকারি অনুষ্ঠানে যান। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান প্রসেনজিৎ। তাতে জল্পনা বাড়লেও প্রসেনজিতের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে দাবি করা হয়, নেতাজিকে নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুষ্ঠান ছিল। তাতে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। তবে সেই সরল ব্যাখ্যায় মন মজেনি রাজনীতিকদের।
আর এবার প্রসেনজিৎ-অনির্বাণ সাক্ষাৎ সেই গুঞ্জনে যেনও ঘৃতাহুতি দিয়েছে। এখন দেখার প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় কি সত্যিই গেরুয়া ঝান্ডা হাতে তুলে নেন কিনা!