সময়ের কী খেলা! দেশের বড় ব্যবসায়ী আজকে পথের কাগজকুড়ানী, জানুন এই হতভাগ্যের করুণ জীবন কাহিনী!
কথায় আছে আজ যে ফকির কাল সে রাজা হয়ে যেতেই পারে। আবার এর উল্টোটাও ঘটতে পারে যখন তখন। যিনি রাজা তিনি এক নিমেষে ফকির বনে যেতেই পারেন। ঠিক যেমনটা ঘটেছে হোটেল ব্যবসায়ী আবুল কালামের সঙ্গে। আবুল কালাম বাংলাদেশের নকলা উপজেলার বাসিন্দা।
এক সময় তিনি ছিলেন শহরের সেরা ব্যবসায়ী আর আজ ভাগ্যের ফেরে তাকে কাগজ ও ময়লা কুড়িয়ে ফিরতে হয়। প্রতিদিন শহরের ডাস্টবিন থেকে সংগ্রহ করেন প্লাস্টিকের বোতল। এগুলো বিক্রি করেই দুই বেলা দু’মুঠো খাবার জোগাড় করেন আবুল কালাম। অন্যের রান্না ঘরে কাটে রাতের বেলা। নব্বইয়ের দশকে নকলা উপজেলায় ছিল আলেয়া সিনেমা হল।
সেই হলের সামনেই বড় হোটেল ছিল আবুল কালামের। সেই হোটেলে দিনরাত ভিড় লেগেই থাকত। এটিই ছিল শহরের সেরা রেস্তোরাঁ। কুড়ি থেকে পঁচিশ জন কর্মচারী কাজ করতো তার আন্ডারে। সকালের খাবারের জন্য লোককে অপেক্ষা করতে হতো দুপুর পর্যন্ত।
দুপুরের খাবারের জন্য লোকে অপেক্ষা করত সন্ধ্যা বেলা পর্যন্ত। রাতের খাবারের জন্য তার হোটেলে লোক অপেক্ষা করতো মাঝরাত পর্যন্ত।
এরপর সিনেমা হল ব্যবসায় পড়ে যায় ভাঁটা। সেইসঙ্গে ব্যবসায় ক্ষতি হতে শুরু করে আবুল কালামের। এরপর আবুল কালামের লিভারের অসুখ ধরা পড়ে। তখন তার স্ত্রী ও সন্তানরা তাকে ছেড়ে চলে যায়। সেই থেকেই ঘরছাড়া অবস্থা তার। অন্যের রান্নাঘরে এখন তার দিন কাটে এবং বোতল কুড়িয়ে কিছু পয়সা উপার্জন করে তিনি নিজের ক্ষুধা মেটান।
আবুল কালাম বলেন, ‘এক সময় শহরের সবচেয়ে বড় হোটেল রেস্টুরেন্ট ব্যবসা আমার ছিল। হঠাৎ লিভারের রোগে আক্রান্ত হয়ে অপারেশন করাতে হয়। এতে সব অর্থ-সম্পদ শেষ হয়ে যায়।
এরপর স্ত্রী-সন্তানেরা আজ আমাকে ফেলে দূরে সরে গেছে।’