বাংলা লোকগানের লাইন ‘চুরি’, অশালীন ‘গেন্দা ফুল’ গান নিয়ে নেটাগরিকদের রোষের মুখে বাদশা
গেন্দা ফুল যে এত নিন্দার ঝড় তুলে দেবে বুঝতে পারেননি তিনি। নাহলে বাংলার এই লোকগীতি নিয়ে অহেতুক টানাহেঁচড়া করতেন না বলিউডের বিখ্যাত র্যাপার বাদশা। সম্প্রতি তিনি আর জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজ মিলে একটি মিউজিক ভিডিও বানান। সেখানে বাদশা সুলভ র্যাপ ছাড়াও ‘বড়লোকের বিটি লো/লম্বা লম্বা চুল; এমন মাথা বিন্ধে দিব/ লাল গেন্দা ফুল৷’ এই চারটি লাইন। ভারতে ইউটিউবে এই গান এখন এক নম্বর ট্রেন্ডিং চলছে এই ভয়াবহ লকডাউনের সময়।
কিন্তু কী এমন আছে এই ভিডিওতে যা দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন নেটাগরিকরা? বাদশা এখানে গাইছেন, বাম তেরা গোঁতে খায়, কামার পে তেরি বাটারফ্লাই/বডি তেরি মাখান জেইসি/খানে মে বস তু বাটার খায়ে’। বাদশার গানের এই পংক্তিগুলি নিয়েই তীব্র আপত্তি উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। পুরো গান জুড়ে এইরকম রসালো শরীরী ভাষা। মাঝে হঠাৎ করে শুরু হচ্ছে “বড়লোকের বিটি লো”। আর জ্যাকলিনের আবেদন ভরা অঙ্গভঙ্গি আর শরীর প্রদর্শন।
নেটাগরিকদের বক্তব্য, ‘এই ফিউডাল, সেক্সুয়াল কমেন্ট এই সময়ে আমরা শুনছি। কেন? বন্ধ হোক এই গান।’ ‘গেন্দা ফুল’ গান শুধু জ্যাকলিনের কোমর নাচায়নি। জ্যাকলিনের কোমরের নীচের অংশে ট্যাটু নিয়ে করেছে অরুচিকর রসিকতাও। আর এর সঙ্গে জুড়েছে বাংলার লোকসঙ্গীতকেও। এইখানেই বাদশার বিরুদ্ধে সরব সোশ্যাল মিডিয়া।
দেখুন কী বলছেন নেটাগরিকেরা
এই গানের রচয়িতা রতন কাহার। ১৯৭৬ সালে গানটির রেকর্ডিং করেন স্বপ্না চক্রবর্তী৷ অশোকা রেকর্ড কোম্পানির সেই গান লোকের মুখে মুখে ফিরতে শুরু করে৷ জেতে গোল্ডেন ডিস্ক পুরস্কারও৷ লোকসঙ্গীতের অনুরাগীরা স্বাভাবিকভাবেই ক্ষুব্ধ এই ঘটনায়। সংগীতশিল্পী লোপামুদ্রা মিত্র এবং রূপঙ্কর বললেন,
[bs-quote quote=”আমি লোকগানের মানুষ নই, কিন্তু যথেষ্ট সম্মান দিয়ে এই লোকগান গাই। এই লোকগান নিয়ে কেউ ব্যবসা করছে দেখলে খুব খারাপ লাগে। এই রতন কাহার, স্বপ্না চক্রবর্তীর মতো শিল্পীরা খুব অসহায় অবস্থায় দিন কাটিয়েছেন। এই ‘গেন্দা ফুল’ গানে তাঁদের স্বীকৃতি জানানো হয়নি বলে যে মানুষ এর বিরোধিতা করছেন এই বিষয়টা অন্তত আশাজনক।” style=”style-13″ align=”center” author_name=”লোপামুদ্রা মিত্র” author_job=”সংগীতশিল্পী” author_avatar=”https://34.91.248.233//srv/htdocs/wp-content/uploads/2020/03/lopamudra-mitra.webp”%5D%5B/bs-quote%5D
[bs-quote quote=”ভিডিয়োতে রতন কাহারের স্বীকৃতি না থাকলে এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। লোকগানের ক্ষেত্রে এটা যথেষ্ট অসম্মান। ওনাদের উচিত স্বীকৃতি দিয়ে ভিডিয়ো রি পোস্ট করা। ” style=”style-13″ align=”center” author_name=”রূপঙ্কর” author_job=”সংগীতশিল্পী” author_avatar=”https://34.91.248.233//srv/htdocs/wp-content/uploads/2020/03/5978404701.jpg”%5D%5B/bs-quote%5D
শুনে নিন বাদশার সেই বিতর্কিত গান
গানের ডিটেইল দেখা যাচ্ছে, লিরিকস রিটেন বাই বাদশা। সে এইসকল অশালীন শব্দ তিনি লিখতেই পারেন। মহিলাদের শরীরকে অবজেক্টিফাই করে পুরো শরীরকেন্দ্রিক গান তিনি লিখতেই পারেন। তিনি জ্যাকলিনের পেটকে গিটারের মতো বাজাতেও পারেন। কিন্তু বাংলার কালজয়ী লোকগান পাঞ্চলাইন হিসাবে ব্যবহার করার কি এক্ষেত্রে খুব দরকার ছিল, প্রশ্ন তুলছেন নেটিজেনরা।