পয়গম্বর বিতর্কের জেরে দর্জির গলা কেটে নৃশংসভাবে খুন উদয়পুরে, ‘ভারতে হিন্দুরাও নিরাপদ নয়’, হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে সরব তসলিমা নাসরিন

পয়গম্বর বিতর্ক যেন কোনওভাবেই থামছে না। সদ্যই এই বিতর্কের জেরে নৃশংস এক খুনের ঘটনা ঘটেছে রাজস্থানের উদয়পুরে। নবী হজরত মহম্মদকে অপমানের অভিযোগে এক দর্জির গলা কেটে খুন করেছে দুই দুষ্কৃতী। এই নিয়ে এবার সরব হলেন বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
টুইটে তসলিমা লেখেন, “উদয়পুরে এক দর্জি কানহাইয়ালালকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে রিয়াজ এবং গিয়াস। তারপর সেই হত্যার ভিডিও ছড়িয়ে দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় আর আনন্দের সঙ্গে ঘোষনা করেছে তারা খুন করেছে এবং তাদের নবীর জন্য সবকিছু করতে পারে। ধর্মান্ধরা এতটাই বিপজ্জনক যে হিন্দুরাও নিরাপদে নেই ভারতে”।
Riaz & Gias brutally killed Kanhaiya Lal, a tailor, in Udaipur and then uploaded the video of the killing on social media & happily declared that they killed & they can do anything for their prophet. Fanatics are so dangerous that even Hindus are not safe in India.
— taslima nasreen (@taslimanasreen) June 28, 2022
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে এক সভায় বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মা নবী হজরত মহম্মদকে নিয়ে একটি বিতর্কিত মন্তব্য করেন। সেই মন্তব্যকে ঘিরে গোটা দেশ উত্তাল হয়। দেশের মধ্যে তো বটেই, নানান মুসলিম প্রধান দেশগুলিতেও এই নিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়। দেশের নানান প্রান্তে বিজেপি নেত্রীর এমন মন্তব্যের বিরোধিতা করে একাধিক হিংসার ঘটনা ঘটে। বিজেপি নেত্রীকে দল থেকে বহিষ্কৃত করা হয়। তবে এখনও সেই বিতর্ক থামেনি।
এসবের মধ্যেই উদয়পুরের বাসিন্দা কানহাইয়ালালের আট বছরের নাবালক ছেলে তাঁর মোবাইল থেকে নূপুর শর্মার মন্তব্যের সমর্থনে একটি পোস্ট শেয়ার করে ফেলে। আর সেই ‘অপরাধের’ ‘শাস্তি’ পেতে হয় কানহাইয়ালালকে। সোশ্যাল মিডিয়ায় হত্যাকারীরা একটি ভিডিও ছড়িয়ে দেয়।
এই ভিডিওতে দেখা যায় যে দর্জি কানহাইয়ালাল দুই ব্যক্তির পোশাকের মাপ নিচ্ছেন। এরপরই মাংস কাটার ছুরি দিয়ে কানহাইয়ালালের গলা কেটে খুন করে দুই দুষ্কৃতী। ভিডিওতে রীতিমতো এরপর উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে খুনের কথা স্বীকার করে নিতেও শোনা যায় দুষ্কৃতীদের। এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষোভ দেখা দিয়েছে চারিদিকে। তুমুল চাঞ্চল্য ছড়ায় এই ঘটনায়। এই ঘটনাটি ঘটেছে উদয়পুরের ধানমান্ডিতে।
রাজস্থান প্রশাসনের তরফে সেখানে ২৪ ঘণ্টা ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট শান্তি বজায় রাখার আর্জি জানিয়েছেন। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষোভে রীতিমতো ফুঁসছে হিন্দু সংগঠন। দুই অপরাধী আপাতত পুলিশি হেফাজতে রয়েছে। ওই দুই দুষ্কৃতীর ফাঁসির শাস্তির দাবী উঠেছে।