পেটের দায়ে শেষ পর্যন্ত পথে পথে ভিক্ষা করছেন উত্তম কুমারের সহ-অভিনেতা, সাহায্যের হাত সব্যসাচী-ঐন্দ্রিলার
মহানায়ক উত্তম কুমারের সঙ্গে তিনি স্ক্রিন শেয়ার করেন সুখেন দাসের ‘প্রতিশোধ’ ছবিতে। সত্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নহবত’ নাটকেও তাঁর অভিনয় ছিল দেখার মতো। কিন্তু এরপরেও রাস্তায় নেমে রীতিমতো ভিক্ষা করতে হচ্ছে প্রবীণ অভিনেতা শঙ্কর ঘোষালকে।
নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে একথা জানান ‘মহাপীঠ তারাপীঠ’ ধারাবাহিকের সাধক বামাক্ষ্যাপা ওরফে অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরী। তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, এক সময়ের বিশিষ্ট অভিনেতা কাজের সুযোগ না পেয়ে পথে পথে হরেক জিনিস ফেরি করতেন। কিন্তু ৭০ বছর বয়সে তা সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে এখন হাতিবাগানে জনবহুল এলাকায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে হাত পাতছেন তিনি।
আরও পড়ুন- ‘কলাকুশলীরা মরল না বাঁচল, তাতে ফেডারেশনের কোনও যায় আসে না’, অকপটে ইন্দ্রাণী
এই খবর পেয়েই এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় শঙ্কর ঘোষালের সঙ্গে। ফোনে নিজের পরিস্থিতির কথা জানাতে গিয়ে গলা ধরে আসে প্রবীণ অভিনেতার। তিনি জানান, বছর ২ আগে তিনি স্টার জলসার ভক্তিমূলক ধারাবাহিকে ৩ দিনের একটি চরিত্রে অভিনয় করেন। সেই সূত্রে সব্যসাচীর সঙ্গে তাঁর আলাপ। সম্প্রতি তিনি খবর পান, দুঃস্থদের পাশে দাঁড়িয়েছেন ‘সাধক বামা’। সাহায্যের আশায় তিনিও যোগাযোগ করেন। সব্যসাচী এবং ঐন্দ্রিলা ২ জনেই সাধ্যমতো সাহায্য করেছেন তাঁকে। পাশাপাশি ২ জনেই নিজেদের সামাজিক পাতায় ভাগ করে নিয়েছেন প্রবীণ অভিনেতার জীবনযন্ত্রণা। ‘‘সব্যসাচীকে নিজের কথা পোস্ট করতে বলে মরমে মরে যাচ্ছি। কোনও দিন এ ভাবে হাত পাততে হবে সবার কাছে স্বপ্নেও ভাবিনি’’, অনুযোগ অশীতিপর শঙ্করের। যদিও এই পোস্টের পরেই সবার থেকে প্রচুর সাহায্য পাচ্ছেন তিনি, এ কথাও জানাতে ভোলেননি।
View this post on Instagram
বিজ্ঞাপনশঙ্কর ঘোষালের নিজের বোন অভিনেত্রী রত্না ঘোষাল। তিনি এখনও বেশ ভালোমতোই অভিনয় করে যাচ্ছেন। বর্তমানে তিনি স্টার জলসার ধারাবাহিক ‘খড়কুটো’-তে অভিনয় করছেন। তা সত্ত্বেও তাঁর দাদার এই অবস্থা? অভিনেতার কথায়, বোন তাঁর জন্য অনেক জায়গাতেই কথা বলেছেন। কিন্তু তা-ও কোনও কাজ পাননি তিনি। এও জানান যে গৌরিবাড়িতে দুই কামড়ার একটি ফ্ল্যাটে ছেলে, বউমা ও নাতিকে নিয়ে বাস তাঁর। গত বছর করোনার জেরে একসঙ্গে কাজ হারান ছেলে ও বাবা।
এরপর থেকেই সকলের দরজায় দরজায় ঘুরছেন প্রবীণ অভিনেতা। নিজেকে সান্ত্বনা দিয়ে এই বলেন, “কাজ নেই। চুরি তো করতে পারব না। অগত্যা সবার কাছে হাত পেতে চেয়েচিন্তে যে ক’দিন পেট চালাতে পারি”। তাই অসহায় হয়ে হাত পাতছেন সকলের কাছে।
বিজ্ঞাপন