বিনোদন

‘ডিস্কো ডান্সার’-সহ একাধিক হিট, কিন্তু হঠাৎই ছন্দপতন, কোথায় হারিয়ে গেলেন ‘মিঠুনের কণ্ঠস্বর’?

বিজ্ঞাপন

অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে তাঁর কোনও মিল নেই ঠিকই, কিন্তু তিনিই একসময় হয়ে উঠেছিলেন ‘মিঠুনের কণ্ঠস্বর’। বাপ্পি লাহিড়ীর সুরে একের প এক ডিস্কো গানে প্রায় অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠেন বিজয় বেনেডিক্ট। কিন্তু নব্বইয়ের দশকে হঠাৎই ইন্ডাস্ট্রিকে বিদায় জানিয়ে গায়েব হয়ে যান গায়ক। কিন্তু কেন?

বিজ্ঞাপন

আশির দশকের গোড়ায় নেপথ্য গায়ক হিসাবে বিজয়ের সাফল্যের পিছনে বাপ্পি লাহিড়ীর অবদান অনস্বীকার্য। আর একাধিক সাক্ষাৎকারে সে কথা স্বীকারও করেছেন বিজয়। গত মঙ্গলবার বাপ্পি লাহিড়ীর প্রয়াণের পর ফের মুখ খুললেন তিনি। জানান কী ভাবে বলিউডে তাঁর পেশাদার জীবন শুরুর নেপথ্যে ছিলেন বাপ্পি লাহিড়ী।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিজয় বলেছেন, “বাপ্পি’দা আমাকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন। তাঁর প্রতি চিরকৃতজ্ঞ থাকব। বাপ্পি’দাকে কোনও দিন ভুলব না। দারুণ সাহসী মানুষ। আমার মতো বহু উঠতি গায়ককে সুযোগ করে দিয়েছিলেন”।

বিজ্ঞাপন

ঠিকই বলেছেন বিজয়। বাপ্পি লাহিড়ীর জন্যই তিনি একসময় বলিউডে বিশাল সাফল্য পান। লন্ডনে একটি কনসার্টে বিজয়ের গলায় ধ্রুপদী সঙ্গীত শুনে মুগ্ধ হয়েছিলেন বাপ্পি লাহিড়ী। তাঁকে বলিউডে আসার অফার দেন বাপ্পিদা। এর কিছু বছর পর লন্ডন ছেড়ে বলিউডে আসেন বিজয়। সেই সময় ‘ডিস্কো ডান্সার’ ছবির সঙ্গীত পরিচালনার ভার বাপ্পি লাহিড়ীকে দেন পরিচালক বি সুভাষ।

বিজ্ঞাপন

এই ছবি টাইটেল ট্র্যাকের জন্য কিশোর কুমারকে ভেবে রেখেছিলেন বি সুভাষ। তবে বাপ্পি লাহিড়ীর ইচ্ছা ছিল বিজয়ের গলায় এই গান রেকর্ড করার। বাপ্পি লাহিড়ী পরিচালককে অনুরোধ করে বলেন যে ‘আই অ্যাম আ ডিস্কো ডান্সার’ গানটি বিজয়ের কণ্ঠে কেমন শোনাবে? এক বার শুনেই দেখুন না। কিন্তু তেমন রাজি হন নি পরিচালক। তিনি জানিয়েছিলেন যে ছবিতে কিশোরের কণ্ঠেই সে গান রাখতে চান তিনি। তবে তার আগে বিজয়ের কণ্ঠে গানের ট্রায়াল অবশ্য শুনেছিলেন।

আর ট্রায়ালেই বাজিমাত। বিজয়ের গলায় সেই গান শুনে পরিচালক এতটাই মুগ্ধ হয়ে যান যে তাঁকে দিয়েই ‘আই অ্যাম আ ডিস্কো ডান্সার’ গানটি রেকর্ড করান তিনি। এই গানটিই বিজয়কে বলিউডে পাকাপোক্ত ব্যবস্থা করে দেয়। শুধু টাইটেল ট্র্যাকই নয়, এই ছবির প্রত্যেকটি গানই আজও মানুষের মনে অমলিন।

বিজ্ঞাপন

বাপ্পি’দার প্রতি চিরকৃতজ্ঞ বিজয় বলেন, “তখনকার দিনে বলিউডে নতুনদের জায়গা করে নেওয়াটা বেশ কষ্টসাধ্য ছিল। তবে বাপ্পি’দা আমাকে উৎসাহ দিয়েছিলেন। ‘ডিস্কো ডান্সার’ ছবির জন্য পরিচালক বি সুভাষের কাছে তাবড় তাবড় গায়ক ছিলেন। তবে বাপ্পি’দাই আমাকে টাইটেল সং গাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন”।

এই গান রেকর্ড করার স্মৃতিচারণা করে তিবি বলেন, “রেকর্ডিংয়ের সময় চারপাশে এত লোকজন দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। গানের সময় নিজের সেরাটা দিতে হবে। তখন মিঠুন’দা বলেন, ‘দারুণ শক্তিশালী গান। দম নিয়ে গলা ছেড়ে গাও’। সে সব কথায় মনে জোর পেয়েছিলাম। সকাল থেকে রেকর্ডিং শুরু হয়েছিল। সন্ধ্যা গড়িয়ে তা শেষ হতে হতে রাত হয়ে যায়”।

‘ডিস্কো ডান্সার’ ছবির তুমুল সাফল্যের পর একের পর এক অফার আসতে থাকে বিজয়ের হাতে। ‘মিঠুনের কণ্ঠস্বর’ হয়ে ওঠেন তিনি। মিঠুন চক্রবর্তীর একাধিক ছবিতে গান গেয়েছেন তিনি। বাপ্পি লাহিড়ী ছাড়াও অনু মালিক, নাদিম-শ্রাবণ, লক্ষ্মীকান্ত প্যায়ারেলালের সুরেও একাধিক গান গেয়েছেন বিজয়।

কিন্তু ১৯৯১ সালে হঠাৎই ছন্দপতন। বলিউড থেকে কার্যত গায়েব হয়ে যান বিজয়। শোনা যায়, সে বছর জার্মানির একটি ঘটনা তাঁকে থামিয়ে দেয়। সেবছর মাফিয়াদের সঙ্গে সংঘর্ষের কারণে মৃত্যু হয় বিজয়ের ভাইয়ের। এরপরই সবকিছু ওলটপালট। বলিউডকে বিদায় জানান বিজয়। তবে ২০১৭ সালে ‘ড্যাডি’ ছবিতে ‘ডান্স ডান্স’ গানটি গাইতে শোনা যায় তাঁকে।

বিজ্ঞাপন
Back to top button

Discover more from Khabor24x7

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading