যত বেশি অহেতুক সন্দেহ, তত কম জীবনের আয়ু, জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা

“সন্দেহ” বিষয়টি খুবই সংঘাতিক একটি মানসিক রোগ। যা একদিকে মানুষের পর্যবেক্ষণ শক্তিকে তীক্ষ্ণ করে অন্যদিকে কিন্তু মানুষের প্রতি অবিশ্বাসকে জন্ম দেয়। তাই এটি শুধুই যে মন্দ তাও বলা যাবে না আবার যে ভালো তাও বলা যাবে না।
যেমন একদিকে এই সন্দেহের বশে কতো মানুষের সংসার, সম্পর্ক ভেঙে যায় তেমনি আবার এই সন্দেহের ভিত্তিতেই পুলিশ, গোয়েন্দারা বিভিন্ন তদন্ত শুরু করেন। পুলিশের ক্ষেত্রে যেমন এটি একটি পেশাগত কারণ ও প্রয়োজন তেমনি সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার ক্ষেত্রে এটি কিন্তু অহেতুক একটি বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। এমনকি অতিরিক্ত সন্দেহ মানুষের শারীরিক এবং মানসিক ক্ষতি করে। বিশেষজ্ঞদের মতে এই রোগ মানুষের আয়ুও কমিয়ে দিতে পারে।
সম্প্রতি সুইডেনের স্টকহোম ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক, প্রায় ২৪ হাজার মানুষের ওপর সন্দেহপ্রবণতা নিয়ে একটি গবেষণা চালান। যার মধ্যে প্রায় ৫৮ শতাংশ মানুষই কিন্তু সন্দেহের বশে অন্যকে সহজে বিশ্বাস করতে পারেন না। অন্যদিকে বাকি ৩৭ শতাংশ মানুষ ভেবে চিন্তে, বিবেচনা করেন এবং অন্যকেও স্বাভাবিক ভাবেই বিশ্বাস করেন।
এছাড়া এই সমীক্ষা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মৃত ব্যক্তিদের ওপরও চালানো হয়। সেখানে দেখা গেছে যাঁরা বেঁচে থাকাকালীন ইতিবাচক চিন্তা-ভাবনার মধ্যে থাকেন তারা বেশিদিন বাঁচেন। অর্থাৎ অন্যভাবে বলা যায় যাঁদের মধ্যে সন্দেহপ্রবনতা কম, তাঁদের মধ্যে হার্টের সমস্যাও বাকিদের তুলনায় কম। এই সমীক্ষায় আরো এক অদ্ভুত বিষয় সামনে এসেছে। সমীক্ষা অনুযায়ী, বয়স্ক মানুষেরা তরুণদের তুলনায় বেশি ইতিবাচক চিন্তা-ভাবনার মধ্যে থাকেন।
স্টকহোম ইউনিভার্সিটির বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন মানুষের যেমন দীর্ঘায়ু হওয়ার জন্য শারীরিক দিক থেকে সুস্থ থাকাটা জরুরি, তেমনি মানসিক দিক থেকেও সুস্থ থাকাটা প্রয়োজন। অর্থাৎ মানুষ যত বেশি ইতিবাচক ও উদার চিন্তা-ভাবনা করবেন তত সুন্দরভাবে জীবন কাটাতে পারবেন। তবে এই বক্তব্যে দ্বিমত দেখা দিয়েছে মনোবিজ্ঞানীদের মধ্যে। মনোবিজ্ঞানীদের একাংশের বক্তব্য, ইতিবাচক চিন্তা-ভাবনা মানুষের জীবনকে সুন্দর করে তুলতে পারে ঠিকই, তবে সকলকে দীর্ঘায়ু করতে পারে এমনটা মানা যাচ্ছে না।