দেউলিয়া হওয়ার পথে বাংলাদেশ! দফায় দফায় বিদ্যুৎ ও পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখার নির্দেশ শেখ হাসিনা সরকারের

কিছুদিন আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি খবর ভেসে আসে যে বাংলাদেশের অর্থনীতি নাকি ভারতের থেকে অনেকটা শক্তিশালী। এই নিয়ে বেশ হইচইও পড়েছিল বটে। তবে বাস্তবে দেখা গেল যে চিত্রটা একাবারেই অন্য। রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের জেরে জ্বালানিতে বেশ প্রভাব পড়েছে। আর বাংলাদেশে ৯৪ শতাংশ জ্বালানিই আমদানি করে থাকে। এর কারণে তাদের ডলারে খরচ করতে হয়। এদিকে, ডলারের দিক থেকে বাংলাদেশি মুদ্রা ৮৫ টাকা থেকে পৌঁছেছে ১০০-তে।
এহেন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অবস্থা এখন শ্রীলঙ্কা বা পাকিস্তানের মতো হওয়ার জোগাড়। সেই পরিস্থিতি যাতে না তৈরি হয়, তাই জ্বালানি তেলের ব্যবহারে এবার লাগাম টানার চেষ্টা চালাচ্ছে শেখ হাসিনা সরকার। সূত্রের খবর অনুযায়ী, গতকাল, সোমবার বাংলাদেশের সরকারের উচ্চপদস্থ কর্তাদের সঙ্গে একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকেই জ্বালানির ব্যবহারে রাশ টানা নিয়ে নানান আলোচনা হয়।
বাংলাদেশে মোট বিদ্যুতের ৬ শতাংশ ডিজ়েল ব্যবহার করে উৎপাদন করা হয়। ঠিক হয়েছে আপাতত ডিজ়েল ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্পুর্ন বন্ধ রাখা হবে। এর ফলে নিশ্চিত ভাবে বিদ্যুতের জোগানে ঘাটতি হবে। সেই ঘাটতিকে সামালানোর জন্য প্রত্যেকদিন ১ থেকে ২ ঘণ্টা লোডশেডিং করে তা নিয়ন্ত্রণ করা হবে। কোথায় কখন বিদ্যুৎ যোগাযোগ বন্ধ করা হবে, তা আগে থেকেই জানিয়ে দেওয়া হবে।
এর পাশাপাশি আজ, মঙ্গলবার থেকেই সপ্তাহে একদিন করে পেট্রোল পাম্প বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের তরফে। গাড়ির পেট্রোল খরচেও রাশ টানার চেষ্টা চলছে। এই নিয়ে নানান নতুন নির্দেশিকা জারি করবে হাসিনা সরকার। সরকারি ক্ষেত্রে কার পুলের ব্যবস্থা করা হতে পারে। কাজের মান ঠিকঠাক রেখেই নানান সরকারি ও বেসরকারি অফিসে কাজের সময় এক থেকে দু’ঘণ্টা কম করার কথাও ভাবা হচ্ছে। রাত ৮টার পর দোকান-বাজার বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে খবর।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহি চৌধুরী বৈঠকের পরে বলেন, “ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, জাপানের মতো উন্নত দেশও এখন লোডশেডিং করছে। আমাদের ধৈর্য ধরে এই ভয়ংকর পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের মানসিকতা নিয়েই ব্যক্তিগত স্তরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের ব্যবহার কমাতে হবে”।
অন্যদিকে, জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, “এই পরিস্থিতিতে আমাদের সাশ্রয়ী হতেই হবে। তবে এই পরিস্থিতি খুব বেশি দিন চলবে বলে মনে হয় না”।