যারা কুমিল্লায় তাণ্ডবের সূত্রপাত করেছে, তাদের খুঁজে বের করার কড়া নির্দেশ দিলেন শেখ হাসিনা
বাংলাদেশের কুমিল্লায় দুর্গামণ্ডপে ভাঙচুরের ঘটনার পর থেকেই শুরু হয়েছে তোলপাড়। বাংলাদেশে যে হিংসার ঘটনা ঘটছে, তা নিয়ে চিন্তায় পশ্চিমবঙ্গের মানুষও। এই পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে দিল্লিও। আজ, মঙ্গলবার ঢাকায় মন্ত্রিসভার বৈঠকে সেদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে কড়া এই হিংসার ঘটনায় কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
এদিনের মন্ত্রিসভার বৈঠকের শেষে মন্ত্রীপরিষদের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান যে এই তাণ্ডবের সূত্রপাত কারা করেছে, তা দ্রুত খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
এর পাশাপাশি বাংলাদেশের নাগরিকদের সম্প্রীতির পরিবেশ বজায় রাখার অনুরোধও করেছেন তিনি। কুমিল্লার ঘটনার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় নানান খবর ছড়াচ্ছে। সত্যতা যাচাই না করে সেসব খবর বিশ্বাস না করার অনুরোধ জানিয়েছেন শেখ হাসিনা।
এই তাণ্ডবের তীব্র নিন্দা করে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের কথাও তুলে ধরেন। মুজিবর রহমান বলেছিলেন, “বাংলাদেশের মাটিতে সাম্প্রদায়িকতার কোনও স্থান নেই। মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান… যাঁরাই এদেশে বসবাস করেন, তাঁরা প্রত্যেকে এদেশেরই নাগরিক। প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁরা সমান অধিকার ভোগ করবেন”।
একইসঙ্গে বাংলাদেশের হিন্দু নাগরিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “আপনারা সবসময় নিজেদের সংখ্যালঘু মনে করেন কেন? আপনারা প্রত্যেকে এই দেশেরই নাগরিক। এই মাটিতে আপনার জন্ম। এই মাটিতে যাঁদের জন্ম, আপনারা এই মাটিরই সন্তান। আপনারা সবাই নিজের অধিকারে বসবাস করেন”।
কুমিল্লার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে সম্প্রীতির ইতিহাসের কথাও তুলে ধরে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসে এটা আছে যে এদেশের মানুষ সবসময় প্রতিটি উৎসব সামিল হয়ে একসঙ্গে সেই আনন্দ উপভোগ করে। মাঝে মাঝে কিছু দুষ্ট চক্র এই ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে মানুষের মধ্যে এই চেতনাকে নষ্ট করতে চায়। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক”।
কুমিল্লার ঘটনার পর আরও বেশি সজাগ হয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এই তাণ্ডব যারা চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থার নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর সেই মতো কাজও শুরু করে দিয়েছে সেখানকার পুলিশ। শুধুমাত্র রাজধানী ঢাকাতেই অন্তত চার হাজার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।