মন্ত্রীর ছেলের বিয়ে! সেই উপলক্ষ্যে বন্ধ জেলার সমস্ত স্কুল, নবদম্পতিকে উপহার দিতে শিক্ষকদের থেকে বাধ্যতামূলক ৫০০ টাকা চাঁদা

মন্ত্রীর ছেলের বিয়ে উপলক্ষ্যে বন্ধ রাখা হল ২৬৫টি স্কুল। শুধু তাই-ই নয়, নবদম্পতিকে উপহার দেওয়ার জন্য শিক্ষকদের ৫০০ টাকা করে চাঁদা নেওয়ারও অভিযোগ উঠল। সেই টাকায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর ছেলে ও পুত্রবধূকে সোনার আংটি, ওয়াশিং মেশিন, রেফ্রিজারেটর উপহার দেওয়া হল বলে খবর।
ঘটনাটি ঘটেছে বাংলাদেশে। জানা গিয়েছে, গত রবিবার কুড়িগ্রামের তিন উপজেলার ২৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রেখে বউভাত অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে শিক্ষকরা এসব উপহার দেন। জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মহম্মদ জাকির হোসেনের একমাত্র ছেলে সাফায়েত বিন জাকির সৌরভের বৌভাতের অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার জন্য কুড়িগ্রামের চিলমারী, রৌমারী ও চর রাজিবপুর উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলি ছুটি দিয়ে শিক্ষকেরা রৌমারী শহরে প্রতিমন্ত্রীর বাড়িতে যান।
আর সেই কারণে ওই তিন উপজেলার ২৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয় বলে জানা গিয়েছে। শিক্ষা কর্মকর্তারা জানান যে প্রধান শিক্ষকদের সংরক্ষিত ছুটি থেকে এই ছুটি দেওয়া হয়েছে।
তিন উপজেলা থেকে মোট ১ হাজার ৩০০ জন শিক্ষককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল মন্ত্রীর ছেলের বউভাতের অনুষ্ঠানে। আর তার জন্য তাদের থেকে বাধ্যতামূলক ৫০০ টাকা করে চাঁদা নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই টাকা দিয়ে নানান উপহার দেওয়া হয়েছে নবদম্পতিকে। এই বউভাতের অনুষ্ঠানে প্রাথমিক শিক্ষকদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তিন উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারাও।
সূত্রের খবর, প্রতিমন্ত্রীর ছেলের বউভাতের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন ১০ হাজার মানুষ। প্রীতিভোজের জন্য ব্যবস্থা ছিল ১৫টি গরু, ৭টি খাসি ও মুরগির মাংসের। কিন্তু সত্ত্বেও ভাত না পেয়ে স্রেফ চা-রুটি খেয়ে নিমন্ত্রণ বাড়ি থেকে ফেরত এসেছেন অনেকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিলমারী উপজেলার অস্টমীরচর ইউনিয়নের এক শিক্ষক এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, “তিনটি উপজেলার শিক্ষক ১ হাজের বেশি। ১৫টি ইউনিয়নের নেতা-কর্মী প্রায় ৪ হাজার ও অন্যান্য আত্মীয়স্বজন মিলে প্রায় ১০ হাজার লোকের সমাগম ঘটে। অনেকেই দাঁড়িয়ে খাবার গ্রহণ করেন, আবার অনেকের বসার জায়গা না পেয়ে বাজারে রুটি-কলা খেয়ে ফেরত এসেছেন”।