বাংলাদেশ

ফের বাংলাদেশের একের পর এক হিন্দু মন্দিরে হামলা, ভাঙা হল একাধিক মূর্তি, দুষ্কৃতীদের কড়া শাস্তির দাবী সেদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের

ফের বাংলাদেশে হিন্দু মন্দিরের উপর হামলা দুষ্কৃতীদের। গত শনিবার দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে পরপর ১৪টি মন্দিরে ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই হামলার বিষয়ে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গি উপজেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা বিদ্যানাথ বর্মণ জানিয়েছেন, “শনিবার রাতে অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীরা মন্দিরগুলিতে হামলা চালায়। মন্দির ভেঙে একাধিক অংশ পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। অন্তত ৯টি বিগ্রহ সম্পূর্ণ নষ্ট করা হয়েছে”।

বিদ্যানাথ বর্মণ দাবী জানিয়েছেন যাতে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করে দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়। বাংলাদেশ পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার গভীর রাত ও রবিবার ভোরের দিকে হামলা চালানো হয় এই মন্দিরগুলিতে। কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তা এখনও জানা যায়নি। তবে অভিযুক্তদের দ্রুতই খুঁজে বের করা হবে বলে জানায় পুলিশ।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ সুপার বলেন, “এই কাজটি পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। দেশের শান্তি বিঘ্নিত করতেই এটা করা হয়েছে”। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলার পুজো উদযাপন পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার ঘোষও। তাঁর কথায়, “এই মন্দিরগুলি ঐতিহ্যবাহী। অনেকেই নিয়মিত এই মন্দির পরিদর্শন করেন। এখানের সব মূর্তি ভেঙে ফেলা হয়েছে। এটা খুবই মর্মান্তিক ও ভয়ংকর ঘটনা”।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের দুর্গাপুজোর সময় বাংলাদেশের ইসকনের মন্দিরে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। অনেক দুর্গা মণ্ডপেও হামলা চালানো হয়েছিল। ভাঙা হয়েছিল একাধিক দুর্গামূর্তি। কুমিল্লা, নোয়াখালিতে হিন্দু মন্দির ও ইসকনের মন্দিরে এমন হামলার কারণে গোটা বিশ্বের সমালোচনার মুখে পড়ে বাংলাদেশ। ভারত সরকারের তরফেও কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার দাবী তোলা হয়। সেই সময় কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। হাসিনা সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল যে এই ঘটনায় কাউকে রেয়াত করা হবে না।

জানা যায়, এই ঘটনায় ৫১টি কেস ফাইল হয়েছিল। ৪৩৯ জনকে চিহ্নিত করা গিয়েছিল। মাত্র তিনটি মামলার প্রেক্ষিতে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনপ ৪৮টি মামলার তদন্ত জারি রয়েছে। সে সময় স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশের তরফে পাঁচটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু কুমিল্লায় হিন্দু মন্দিরের উপর হামলার ঘটনার তদন্তে কী কী তথ্য উঠে এসেছে, তা নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি কোনও কমিটির সদস্যরাই। সেই সময় হাসিনা সরকারের তরফে হিন্দু মন্দিরে হামলার ঘটনা নিয়ে কড়া হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই হুঁশিয়ারি যে বিফলে গিয়েছে, তা বাংলাদেশের একের পর এক হিন্দু মন্দিরে হামলার ঘটনায় কার্যত স্পষ্ট।

Related Articles

Back to top button