ভারতের মানচিত্র থেকে বাদ জম্মু-কাশ্মীর, তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’য় দেশের বিকৃত মানচিত্র নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে, আইনি নোটিশ বিজেপি’র
তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’য় ছাপা হল ভারতের বিকৃত মানচিত্র। এই মানচিত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে জম্মু ও কাশ্মীরকে। আজ, শনিবার ২৯শে জানুয়ারি জাগো বাংলার সংখ্যায় বিকৃত মানচিত্র ছাপা নিয়ে শাসক-বিরোধী তরজা তুঙ্গে। বিজেপির তরফে একটি আইনি নোটিশও পাঠানো হয়েছে ইতিমধ্যেই।
বিজেপি নেতা ও কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি এইন নোটিশ পাঠিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এদিকে, তৃণমূলের দাবী, একরকম কোনও ভুল হয়ে থাকলে, তা সম্পূর্ণ অনিচ্ছাকৃত। তবে এই নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ে নি বিজেপি।
প্রসঙ্গত, আজ, শনিবার অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকারের একটি লেখা এই পাতায় প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে ভারতের যে মানচিত্র ব্যবহার করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ও বিকৃত। এই মানচিত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরকে, এমনই অভিযোগ উঠেছে।
A distorted map of Bharat has been displayed today in the anti-India magazine of @AITCofficial @MamataOfficial @Abhi @KunalGhoshAgain called @jago_bangla . @amitmalviya @BJP4Bengal pic.twitter.com/S8km1SNCvB
বিজ্ঞাপন— Rathindra Bose (@rathindraOFC) January 29, 2022
বিজ্ঞাপনবিজেপি নেতা তরুণজ্যোতি তিওয়ারির পাঠানো আইনি নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে যে ভারতীয় মানচিত্রকে যেভাবে বিকৃত করা হয়েছে, তা আন্তর্জাতিক স্তরের জন্য ক্ষতিকারক। জাগো বাংলা কর্তৃপক্ষকে এর ব্যাখ্যা দিতে হবে বলেও জানানো হয়েছে এই আইনি নোটিশে।
এই বিষয়ে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, “আজকে তৃণমূলের মুখপত্র জাগো বাংলাতে একটা ছবি ছাপা হয়েছে। সম্পাদকীয়-এ ভারতবর্ষের ম্যাপ থেকে জম্মু এবং কাশ্মীর কে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই পত্রিকার সম্পাদক হলেন পার্থ চ্যাটার্জি, যিনি সংবিধানের নামে শপথ নিয়েছিলেন… এই ঘৃণ্য কাজ ইচ্ছাকৃত করা হয়েছে ভারতবর্ষের সার্বভৌমত্ব এবং একাগ্রতা কে আঘাত করার জন্য। তৃণমূলের ভারতবিরোধী মনোভাব আমরা আগেও দেখেছি, দেশের সেনা কে প্রশ্ন করা থেকে কাশ্মীরে ধারা ৩৭০ বিলুপ্তি পর্যন্ত একের পর এক ঘটনায় তৃণমূলের স্ট্যান্ড আমরা দেখেছি। আজকে এই ছবি ছাপিয়ে তারা প্রমাণ করলো যে তারা আসলে দেশদ্রোহী”। এছাড়াও এই পত্রিকার তরফে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
এই নোটিশে লেখা হয়েছে, “আপনারা ইচ্ছাকৃত জম্মু কাশ্মীরকে বাদ রেখে এই মানচিত্রটি প্রকাশ করেছেন। নিজেদের রাজনৈতিক বসদের খুশি করতেই এই ঘটনা”।
এই প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “পণ্ডিত নেহরু যদি সে সময় পরিস্থিতি পুরোটা নিজে নিয়ন্ত্রণ করতেন তা হলে এই পরিস্থিতিই হোত না। সর্দার প্যাটেল নেহরুর প্রবল বিরোধিতা করে এবং ভারতবর্ষের সমস্ত জাতীয়তাবাদীদের আবেগকে সঙ্গে নিয়ে ওই ভূখণ্ডটি ভারতবর্ষের মধ্যে রেখে দিয়েছিলেন। নেহরুর সবথেকে বড় অবদান ভারতবাসীর জন্য কাশ্মীর সমস্যা। তিনি সম্পূর্ণভাবে দায়ী। তৃণমূল কংগ্রেস তো আর কংগ্রেসের থেকে আলাদা নয়। তৃণমূল কংগ্রেস আসলে কংগ্রেসের ঐতিহ্যটা বহন করছে। কংগ্রেসের গর্ভ থেকেই ওদের জন্ম”।
অন্যদিকে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের দাবী, “বিজেপি তো কাগজপত্র বের করে না। দৈনিক কাগজ কীভাবে কী হয় তার সঙ্গে তো ওদের কোনও সম্পর্ক নেই। জনগণের সঙ্গেও নেই! কোর্টে কোর্টেই ঘুরে বেড়ায়”।
কুণালের সংযোজন, “আমি এই বিষয়টা নির্দিষ্টভাবে দেখিনি, তবে যদি হয়ে থাকে এটা একটা বিভাগীয় বিষয় থাকে, তাড়াহুড়ো করে পেজ মেকআপ হয়। যদি কোথাও কোনও ভুলবশতও কিছু হয়ে থাকে। কারণ, অনেক সময়ই নেট থেকে ছবি নেওয়া হয়, তাড়াহুড়োর মধ্যে ডিজাইনার ছবি নামান। এর সঙ্গে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কোনও সম্পর্ক নেই। যদি থাকেও তাহলে সেটা সম্পূর্ণ ভুল। বিজেপির এ নিয়ে নাচানাচি করার কোনও কারণ ঘটেনি”।
বিজ্ঞাপন