বয়স সংখ্যামাত্র! ৭৯ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক স্তরে সোনা জিতলেন বৃদ্ধা, বাংলার মুখ উজ্জ্বল বিশ্বের দরবারে
বয়স যে কেবল মাত্র একটা সংখ্যা, তা ফের প্রমাণ করলেন তিনি। অদম্য মোড়ে জোর ও কঠোর পরিশ্রমের ফলে যে ৭৯ বছর বয়সেও বিশ্বের দরবারে সোনা জিতে নেওয়া যায়, তেমনটাই করে দেখালেন প্রত্যন্ত এক গ্রামের প্রাক্তন প্রধান শিক্ষিকা অনিমা তালুকদার। বাংলার মুখ উজ্জ্বল করলেন তিনি।
গত রবিবার সিঙ্গাপুরে বয়স্কদের হন্টন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে সাত দেশের ৯ জন প্রতিযোগীকে হারান অনিমা তালুকদার। সকলের সামনে থেকে বিশ্বের মঞ্চে সোনা জিতে সকলকে চমকে দিলেন তিনি।
গত শনিবার ও রবিবার ছিল সিঙ্গাপুরে আন্তর্জাতিক মাস্টার্স ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ। এই প্রতিযোগিতার দৌড় ও হাঁটা বিভাগে অংশ নেন অনিমা তালুকদার। এই বিভাগেই সোনা জিতে নেন তিনি। এর আগে ২৭শে এপ্রিল চেন্নাইতে বয়স্কদের হাঁটার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে রুপো জিতেছিলেন তিনি।
আর এরপরই একেবারে বিশ্ব মঞ্চে। অনিমাদেবীর এই সাফল্যে খুবই খুশি তাঁর ছেলে ও পুত্রবধূ। তারা দু’জনেই পেশায় চিকিৎসক। তাঁর ছেলে অরুণাংশু তালুকদার জানান যে এই বয়সে দাঁড়িয়েও কোনও বয়স্কজনিত রোগ নেই অনিমাদেবীর। তিনি জানান যে তাঁর মায়ের মনের জোর প্রচণ্ড। খেলাধুলা করতেও ভালোবাসেন তিনি।
জানা গিয়েছে, বর্ধমানের কালনার বাদাগাছি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন অনিমা তালুকদার। সেই সময় তিনি প্রতিদিন হেঁটেই স্কুলে যেতেন। আসলে তাঁর কৃষ্ণদেবপুরের বাড়ি থেকে স্কুল পর্যন্ত যাওয়ার সরাসরি কোনও বাস ছিল না। সে বাস ছিল, সেটি স্কুলের ২ কিলোমিটার আগেই নামিয়ে দিত। আর সেই ২ কিলোমিটার পথ প্রতিদিন হেঁটেই যাতায়াত করতেন অনিমাদেবী।
অবসর নেওয়ার পরও খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। জানা যায়, ২০০৪ সাল থেকেই বয়স্কদের নানান হাঁটার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন অনিমাদেবী। আর এবার আন্তর্জাতিক মঞ্চেও তাঁর জয়জয়কার। সোনা জিতে নিলেন তিনি। অনিমাদেবীর কথায়, হাঁটার থেকে ভালো কিছু হতে পারে না। তিনি জানান যে সকলের প্রতিদিন অন্তত ২০ মিনিট হেঁটে ঘাম ঝরানো উচিত।