শরীর ফিট রাখতে সাইকেলে চেপে মুড়ি বিক্রি করেন, চেখে দেখবেন নাকি বছর সত্তরের ‘দাদুর স্বাদেভরা ঝালমুড়ি’!

বয়স হয়েছে, তাতে কী! শরীর ফিট রাখা চাই। তাই মাইলের পর মাইল সাইকেলে চেপেই মুড়ি বিক্রি করছেন বছর সত্তরের পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত হোমগার্ড। নাম মহম্মদ ইয়াকুব আলি। তিনি থাকেন সুলকাপাড়ায়। নিজের হাতে ভাজেন মুড়ি। এরপর তা সাইকেলে চেপে বিক্রি করেন ইয়াকুব।
কিছুদিন আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল ভাইরাল হয়েছিলেন বাদাম কাকু ভুবন বাদ্যকর। রোজগারের দায়ে গান করে বাদাম বিক্রি করতেন তিনি। তবে ইয়াকুব ঝালমুড়ি বিক্রি করছেন দুটি কারণে। এক তো নিজেকে ফিট রাখা আর অন্যটি অবসরের পর সংসারের হাল ধরা। এই মুড়ি বিক্রি করেই মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন তিনি।
তাঁর সংসার চালানোর অন্যতম ভরসা এই মুড়ির বিক্রির আয়। এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর সাকুল্যে জোটে এককালীন ৫০ হাজার টাকা। কীভাবে সংসার চালাবো সেই দুশ্চিন্তা যখন কুড়েকুড়ে খাচ্ছিল তখনই ঝালমুড়ি বিক্রির কথা মাথায় আসে। শুরু থেকেই পেশার প্রতি সৎ থাকতে চেয়েছি। তাই খদ্দেরের অভাব হয় না। লক্ষ্য নিয়ে এগোলে যে কোন কাজেই সফলতা মেলা সম্ভব বলে নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে মনে করি”।
ইয়াকুব বাড়িতে যে শুধু মুড়িই ভাজেন তা নয়, তাঁর মাখা ঝালমুড়ির মশলাও কিন্তু সম্পূর্ণ নির্ভেজাল। কোনও প্যাকেটজাত মশলা নয়, তিনি এই ঝালমুড়িতে ব্যবহার করেন বাটা মশলা তাও আবার নিজের হাতে বাটা।
বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যে ৬টা পর্যন্ত চলে ঝালমুড়ি বিক্রি। সাইকেলে চড়ে চষে বেড়ান গ্রাম-গ্রামান্তরে। নিজের এই ব্র্যান্ডের নাম রেখেছেন, ‘দাদুর স্বাদেভরা ঝালমুড়ি’। তার এই ঝালমুড়ির স্বাদ চাখতে অপেক্ষা করেন বহু মানুষ।
ইয়াকুবের ছেলে বিশেষভাবে সক্ষম। বাড়িতে রোজগেরে বলতে তিনি একাই। আর নিজেকে ফিট রাখতেও চান তিনি। তাই এক কাজেই দুই কাজ হয়ে যায় ইয়াকুবের। ২০১৬ সাল থেকে ঝালমুড়ি বিক্রি করছেন তিনি। তবে করোনা কালে আয় কিছু কমেছে। এ নিয়ে বেশ চিন্তাতেই রয়েছেন তিনি।