অচলায়তন ভেঙে নতুন ইতিহাস গড়লেন সানা, পাকিস্তানের প্রশাসনিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রথম হিন্দু মহিলা
সমস্ত বাধা-বিপত্তি, প্রতিকূলতা পেরিয়ে নতুন ইতিহাসের সাক্ষী থাকলেন সানা রামচাঁদ। পাকিস্তানের প্রথম হিন্দু মহিলা হিসেবে সে দেশের প্রশাসনিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেন তিনি। পাকিস্তান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের জন্য নির্বাচিত হলেন তিনি। পাকিস্তানের সবথেকে কঠিনতম পরীক্ষা সেন্ট্রাল সুপিরিয়র সার্ভিসেস-এ পাশ করলেন তিনি প্রথম হিন্দু মহিলা হিসেবে। এই পরীক্ষায় পাশের হার মাত্র ২ শতাংশ।
পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক হিন্দুদের বাস। সেই প্রদেশেরই শিকারপুর জেলার গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দা সানা। আগেই তিনি পাশ করেছেন এমবিবিএস। এরপর রাজ্যের প্রশাসনিক পদে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। এবারের সিএসএস পরীক্ষায় বসেছিলেন মোট ১৮,৫৫৩ জন। এদের মধ্যে মৌখিক, লিখিত, মনোবিজ্ঞান এবং শারীরিক পরীক্ষার সমস্ত বাধা টপকে সফল হয়েছেন মাত্র ২২১ জন। তাঁদের মধ্যে ৭৯ জন মহিলা। এই পরীক্ষায় প্রথম স্থানও অধিকার করেছেন এক মহিলাই, তাঁর নাম মাহিন হাসান। তবে হিন্দু মহিলা হিসেবে এই তালিকায় রয়েছেন একমাত্র সানা। এটা পাকিস্তানের ইতিহাসে এই প্রথমবার।
সিন্ধ প্রদেশের চন্দাকা মেডিক্যাল কলেজ থেকে ডাক্তারি পাশ করেছেন সানা। এরপর, করাচির সিভিল হাসপাতালে প্র্যাকটিস শুরু করেন তিনি। বর্তমানে, সিন্ধ ইনস্টিটিউট অফ ইউরোলজি অ্যান্ড ট্রান্সপারেন্ট থেকে তিনি এসসিপিএস করছেন।
পাকিস্তানের স্বাধীনতার ৭৩ বছর পর নতুন ইতিহাস গড়লেন সানা। সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেচ্ছার বন্যায় ভাসছেন তিনি। পাকিস্তান পিপলস পার্টির বর্ষীয়ান নেতা ফারহাতুল্লাহ বাবর সানাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, “সানা রামচাঁদকে অভিনন্দন। পাকিস্তানের হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে গর্বিত করেছেন উনি।” সানার এই সাফল্য পাকিস্তানের বহু মেয়েকে অনুপ্রাণিত করবে বলে আশা করছেন তিনি।
সানা নিজে টুইটারে লেখেন, “ঈশ্বরের অশেষ কৃপা। আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি সেন্ট্রাল সুপিরিয়র সার্ভিসেস ২০২০ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি। পাকিস্তান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসে যোগ দেব। সব সম্ভব হয়েছে আমার বাবা-মায়ের জন্য”।