খেতে না পেয়ে অনাহারে হাহাকার করছে চীনের মানুষ, মিলছে না সরকারি সহায়তা, ৯ দিন ধরে গৃহবন্দি মানুষ

করোনা সংক্রমণের জেরে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে চীনের জিয়ান শহরে। পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হয়ে উঠছে। এই শহরের মানুষের দাবী লকডাউনের জন্য জারি করা অপ্রয়োজনীয় কঠোরতার কারণে তাদের খাবার জুটছে না। এদিকে চীনা কর্মকর্তাদের দাবী, সরকার পর্যাপ্ত খাবার সরবরাহ করছে। বলে রাখি, এই শহরের এক কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ গত ৯ দিন ধরে গৃহবন্দি।
বিবিসির প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে দাবী করা হয়েছে যে লকডাউনের জেরে চীনা মানুষ খাবার কিনতে বাইরে যেতে পারছে না। এদিকে সরকারের দাবী, খাবার সরবরাহ আগের মতোই রয়েছে। কিন্তু অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবী করছেন যে তারা খাদ্য সামগ্রী পান নি। খাবার না পেয়ে অনাহারের মতো পরিস্থিতি হয়েছে তাদের।
বছরের শেষ দিনেও চীনে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু তবুও এই সংখ্যা ভারত ও অন্যান্য দেশে করোনা আক্রান্তের এক শতাংশও নয়। এমনিতেই তথ্য লুকোতে চীন সিদ্ধহস্ত। তাই জিয়ান শহরে আদৌ কত মানুষ করোনা আক্রান্ত, তার সঠিক সংখ্যা কেউ জানতে পারছে না।
লকডাউন চলাকালীন খাবার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস পেতে চীনারা চীনের সোশ্যাল মিডিয়া Weibo-এর সাহায্য নিচ্ছেন। অনেকের অভিযোগ তারা খাদ্য সামগ্রী পাচ্ছেন না। এক ব্যক্তি পোস্টে লিখেছেন, “আমি গত চার দিন ধরে অনলাইনে অর্ডার করা পণ্যের জন্য অপেক্ষা করছি। এমনকি আমাকে আমার কম্পাউন্ড থেকে বের হতেও দেওয়া হচ্ছে না। আমার খাবার ফুরিয়ে গেছে”।
আবার অন্য একজন Weibo ব্যবহারকারী লিখেছেন, “সরকারি সাহায্যের সরবরাহ এতটাই খারাপ যে আমি যে জেলায় আছি, সেখানে কিছুই পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের একটি জোট করে অর্ডার করতে বলা হয়েছে। দামও অনেক বেশি নেওয়া হচ্ছে”। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে, যাতে দেখা গিয়েছে জিয়ানের একটি আবাসনের কিছু বাসিন্দা খাবারের অভাবের অভিযোগ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তর্ক করছেন।
চীনের সরকারি মুখপত্র গ্লোবাল টাইমসে বলা হয়েছে যে কিছু জায়গায় আবাসিক কমপ্লেক্সের প্রবেশদ্বারে খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। কিন্তু বাসিন্দাদের দোরগোড়ায় গিয়ে সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত লোক নেই। গোটা শহরে ডেলিভারিম্যানেরও অভাব রয়েছে।
এও জানানো হয়েছে যে অনেক গাড়ির চালকই নিজেদের কোয়ারেন্টাইন করে নিয়েছেন। গত বুধবার চীনা কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন যে কম কর্মীদের উপস্থিতি এবং সহায়তা প্রদানে অসুবিধার কারণে শহরে প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহে সমস্যা দেখা দিচ্ছে।