এমনও হয়! দেশে কাগজের অভাব, এর জেরে বাতিল হয়ে গেল সব পরীক্ষা

পড়াশোনা ও পরীক্ষা, দুই-ই অঙ্গাঙ্গিকভাবে জড়িত। পড়ুয়ারা সারবছর ধরে কি কি পড়াশোনা করছে, তা নির্ধারণ হয় পরীক্ষার মাধ্যমেই। পরীক্ষা আছে বলেই পড়ুয়াদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বা মাথাব্যাথা রয়েছে। পরীক্ষায় পাশ তো করতে হবে। সাধারণত, পরীক্ষা হয় কাগজের উপর লিখেই। আবার পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি করতেও দরকার পড়ে কাগজের।
কিন্তু ভাবুন তো, যদি কাগজও না থাকে, তাহলে পরীক্ষাটা হবে কীভাবে? এবার যেন দেশের লক্ষ লক্ষ পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশ চিন্তা পড়ে গেল তাদের অভিভাবকদের মধ্যে। কিন্তু সরকারও যে নিরুপায়। তাদেরও কিছু করার নেই।
ভারতের প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কায় ঘটে গেল এক অবাক করে দেওয়া ঘটনা। গতকাল, শনিবার জানা গেল যে সেদেশে কাগজের অভাবের ফলে পড়ুয়াদের পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে শ্রীলঙ্কান সরকার। হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন, কাগজের অভাবের জেরে বাতিল সব পরীক্ষা। কলম্বো জানিয়েছে যে দেশে এতটাই আর্থিক অনটন চলছে যে বিদেশ থেকে কাগজ আমদানি করাও যাচ্ছে না।
সরকারি কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে যে আগামীকাল সোমবার থেকে শুরু হলে চলা টার্ম টেস্ট পেপার বাতিল হয়েছে যার কারণে পরীক্ষা বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। ১৯৪৮ সালে শ্রীলঙ্কা স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই চরম অর্থ সঙ্কটের মুখে পড়েছে দেশ। এই কারণে কোনও দেশে থেকে কাগজ আমদানি করাও সম্ভব হচ্ছে না।
শ্রীলঙ্কার শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, “স্কুল কর্তৃপক্ষ বিদেশ থেকে কাগজ ও কালি আমাদানি করতে পারছে না, ফলে প্রশ্নপত্র ছাপানোও মুশকিল হচ্ছে”। সরকারি সূত্রের খবর অনুযায়ী, এই সিদ্ধান্তের ফলে দেশের ৪৫ লক্ষ ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে দুই তৃতীয়াংশের পরীক্ষা অনিশ্চয়তার মধ্যে চলে যেতে চলেছে। এই টার্ম টেস্টের মাধ্যমেই শিক্ষার্থীরা পাশ করে পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করা হতে পারবে কী না, তা নির্ধারণ করা হয়।
শ্রীলঙ্কার রিজার্ভে বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি পড়েছে। এর জেরে চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়েছে সেই দেশ। স্বাধীনতার পর থেকে এমন দুরাবস্থা এই দেশে দেখা যায়নি বলে জানা গিয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রেও ঘাটতি দেখা দিতে শুরু করেছে। দেশে জ্বালানি, ওষুধপত্র, খাদ্যের অভাবও রয়েছে।
চলতি সপ্তাহেই শ্রীলঙ্কার তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল যে এই সমস্যা সমাধানের জন্য তারা আইএমএফের দ্বারস্থ হব। শ্রীলঙ্কা প্রচুর দেনাও রয়েছে। চলতি বছরেই সেই দেনা শোধ করে দেওয়ার কথা থাকলেও, তা যে হবে না, তেমনটাই মনে হচ্ছে। এমন কঠিন পরিস্থিতি ভারতের প্রতিবেশী দেশ কীভাবে সামলাবে, এখন সেটাই দেখার।