ভেবেছিলেন বাতানুকুল ঘরে সুন্দরী তন্বীর নরম হাতের ম্যাসাজ উপভোগ করবেন। কিন্তু তার বদলে এমন ভয়ানক ঘটনার সম্মুখীন হতে হবে তাকে তা কে জানতো!
বডি ম্যাসাজ করে দেবে ‘খুশি’, সঙ্গে এক সুন্দরীর ছবি, যোগাযোগের জন্য দেওয়া হয়েছে মোবাইল নম্বরও। চাঁদনী চক মেট্রো স্টেশনের দেওয়ালে এমনই বিজ্ঞাপন চোখে পড়েছিল মধ্য কলকাতার বউবাজারের বাসিন্দা এক যুবকের। এমন লোভনীয় সুযোগ ছাড়তে পারেননি তিনি।
খুশির সঙ্গে দেখা করার লোভে সঙ্গে সঙ্গেই যোগাযোগ করেন ওই যুবক।
কিন্তু, ‘খুশি’র ম্যাসাজ পার্লারে যাওয়ার জন্য মোবাইলে যোগাযোগ করতেই বিপত্তি শুরু।
Related Posts
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কিছুদিন আগে ঘটা এই ঘটনায় বউবাজারের প্রিন্সেপ স্ট্রিটের বাসিন্দা ওই যুবক সুন্দরী ‘খুশি’র নামে ওই পোস্টারটি দেখে মোবাইল নম্বরটিতে ফোন করেন।
তখনই এক ব্যক্তি ফোনের ওপ্রান্ত থেকে নিজেকে ‘খুশি’র ম্যাসাজ পার্লারের এজেন্ট বলে পরিচয় দেয়। ওই যুবককে বলা হয় তাদের ম্যাসাজ পার্লারে পুরো বডি ম্যাসাজ করে দেওয়া হয়। টাকাপয়সা পর্যন্ত জানিয়ে দেওয়া হয়। এরপর ওই ব্যক্তি যুবককে গিরিশ পার্ক মেট্রো স্টেশনের ২ নম্বর গেটে অপেক্ষা করতে বলে। সেখান থেকেই প্রতারিত যুবককে ম্যাসাজ পার্লারে নিয়ে যাওয়ার কথা হয় উভয়ের মধ্যে। ঘটনার দিন গিরিশ পার্ক মেট্রো স্টেশনের নির্দিষ্ট গেটে অপেক্ষা করছিলেন যুবক। কিছুক্ষণ পর লাল রঙের একটি স্কুটি নিয়ে এক ব্যক্তি তাঁর কাছে আসে। স্কুটিতে উঠলে এজেন্ট নামক ওই ব্যক্তি তাঁকে সোনাগাছি তথা রামবাগান অঞ্চলের নীলমণি মিত্র স্ট্রিটের একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। যুবককে জানানো হয়, ভিতরেই রয়েছে ম্যাসাজ পার্লার। যুবককে একটি ঘরের ভিতর বসতে বলা হয়। কিছুক্ষণ পর ঘরের দরজা খুলতে দেখা যায়। আর তারপরেই আসল ঘটনা প্রকাশ্যে আসে।
সুন্দরী তো দূর অস্ত, ওই ব্যক্তিই হাজির হয় আরও দু’জনকে সঙ্গে নিয়ে। রীতিমতো মারমুখী ওই ব্যক্তিরা তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ধস্তাধ্বস্তি শুরু হয় উভয়ের মধ্যে। যুবক প্রতিবাদ জানিয়েও কিছু করতে পারেনি। যুবকের দু’টি পকেট ঘেঁটে অপরাধীরা ৭ হাজার ২০০ টাকা লুট করে নেয়। তাঁকে গালিগালাজ ও হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তিনি ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে কোনওমতে পালিয়ে যান। পুলিশকে যুবক জানিয়েছেন, তিনি স্কুটির নম্বর দেখেননি। কিন্তু স্কুটি ও অভিযুক্তদের দেখলে সহজে শনাক্ত করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, কলকাতা শহরের বিভিন্ন জায়গায় দেওয়ালে দেখা মেলে এইরকম ধরনের ম্যাসাজ পার্লারের বিজ্ঞাপনের।
আর এই ম্যাসেজ পার্লারের আড়ালেই অপরাধের ছক কষে অপরাধীরা।
যদিও প্রতারিত হওয়ার পরেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই লোকলজ্জা ও ভয়ে কেউ অভিযোগ জানাতে চান না।
এই ধরনের ঘটনা বাড়বাড়ন্ত শুরু হওয়ার পর থেকেই এই ধরনের পোস্টার বা বিজ্ঞাপন থেকে শহরবাসীকে সতর্ক করছে পুলিশও।