কলকাতায় দাপট বাড়ছে অ্যাডিনো ভাইরাসের, ফের হাসপাতালে মৃত্যু দুই শিশুর, ক্রমেই ছড়াচ্ছে আতঙ্ক

ধীরে ধীরে ভয়ানক আকার ধারণ করছে অ্যাডিনো ভাইরাস। আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আতঙ্কের মাঝেই আজ, সোমবার সকালে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও বি সি রায় হাসপাতালে আরও দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে এই ভাইরাসের জেরে। গত ৪৮ ঘণ্টায় এই নিয়ে মোট চার শিশুর প্রাণ গেল এই অ্যাডিনো ভাইরাসের ফলে। নিহত শিশুদের পরিবার জানাচ্ছে যে ওই শিশুরা জ্বর, সর্দি-কাশিতে ভুগছিল। কিন্তু ডেথ সার্টিফিকেটে অ্যাডিনো ভাইরাসের উল্লেখ নেই।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে যে শিশুর মৃত্যু হয়েছে, তার বয়স মাত্র ন’মাস। হুগলির চন্দননগরের বাসিন্দা। পরিবার সূত্রে খবর, গত দশদিন ধরে জ্বর, সর্দি, কাশিতে ভুগছিল। সঙ্গে ছিল শ্বাসকষ্ট। একাধিক হাসপাতাল ঘুরে গত ২০ ফেব্রুয়ারি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাকে।
কিন্তু শেষরক্ষা হল না। আজ, সোমবার ভোরে হাসপাতালেই মৃত্যু হয় শিশুটির। এর আগে রবিবার প্রাণ হারায় দু’টি শিশু। একজন ভর্তি ছিল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে আর অন্যজনের চিকিৎসা চলছিল বি সি রায় হাসপাতালে।
এই অ্যাডিনো ভাইরাস রুখতে পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করে দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। জারি করা হয়েছে একাধিক সতর্কতা। সমস্ত সরকারি হাসপাতালে ফিভার ক্লিনিক চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিশুর জ্বর যদি ১০২ ডিগ্রির উপর থাকে আর পালস রেট যদি ৬০-এর নিচে নেমে যায়, তাহলে তৎক্ষণাৎ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথা জানাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। বিশেষজ্ঞদের মতে, কোভিডের মতোই এই ভাইরাস শ্বাসনালীতে আক্রমণ করছে।
স্বাস্থ্য দফতরের পরামর্শ, বাড়ি পালস অক্সিমিটার দিয়ে শিশুর রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা অন্তত দিনে তিনবার মাপতে হবে। খুব বেশি জ্বর এলে শিশুকে স্নান করিয়ে ভালোভাবে শুকনো কাপড় দিয়ে গা মুছে দিতে হবে। আজ, সোমবার এই অ্যাডিনো ভাইরাস নিয়ে আলোচনার জন্য বৈঠকে বসছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। এর আগে ডিরেক্টর অফ মেডিক্যাল এডুকেশন দেবাশিস ভট্টাচার্য বি সি রায় হাসপাতালে পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন।