মাটি খুঁড়তেই বেরিয়ে এল প্রাচীন ইতিহাস, মিলল নবাব আমলের জিনিস, উদ্ধার কলকাতার সবচেয়ে বড় কামান

কলকাতার ইতিহাস যে কয়েক হাজার বছরের পুরনো, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। দমদমের ক্লাইভ হাউসের মাটির নীচ থেকে উদ্ধার হওয়া প্রত্নতত্ত্ব জিনিসপত্র সেই প্রমাণ আগেই দিয়েছে। এবার দমদম থেকেই উদ্ধার হল আরও এক প্রাচীন ইতিহাস। দমদম জেলের কাছে মাটি খুঁড়ে মিলল বিশাল কামান। মাটি খুঁড়ে কামানের পাঁচ ফুট অংশ বের করা হলেও আরও পাঁচ ফুট মাটির নিচেই রয়েছে বলে অনুমান রাজ্য সরকারের অ্যাডমিনিস্ট্রেটর জেনারেল অ্যান্ড অফিসিয়াল ট্রাস্টি বিপ্লব রায় ও কামান বিশেষজ্ঞ অমিতাভ কারকুনের। এটিই হবে কলকাতার সবথেকে বড় কামান।
স্থানীয় সূত্রে খবর, দমদম সেন্ট্রাল জেলের মোড়ে রাস্তার ধারে অনেকদিন ধরেই কামানের মুখ দেখা যাচ্ছিল। মাটি থেকে এর উচ্চতা প্রায় এক ফুটের মতো। সেটা নীচে কতটা গভীরে রয়েছে, তা জানা যায়নি। এই কামান উদ্ধারের জন্য উদ্যোগ নেন রাজ্য সরকারের অ্যাডমিনিস্ট্রেটর জেনারেল অ্যান্ড অফিসিয়াল ট্রাস্টি বিপ্লব রায়। তিনি এবং কামান বিশেষজ্ঞ অমিতাভ কারকুন ঘটনাস্থলে যান। গতকাল, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শুরু হয়। মাটি সরানো হতেই জায়গাটি ঘিরে ফেলে দমদম থানার পুলিশ।
দেড় ফুট খোঁড়ার পরই দেখা যায় ওই কামানকে ঘিরে রয়েছে অনেক তার। সেগুলি সরিয়ে আরও আড়াই ফুর মতো খোঁড়া হয়। সব মিলিয়ে মোট চার ফুটের মতো মাটি খোঁড়া হয়। সন্ধ্যে নেমে আসায় আর খোঁড়া সম্ভব হয়নি। এখন ওই কামানের পাঁচ ফুট মতো অংশ দেখা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, ওই কামানের আরও প্রায় ৫ ফুট অংশ মাটির তলায় রয়েছে। সেই কামান দেখার জন্য ভিড় জমিয়েছেন স্থানীয়রা।
রাজ্য সরকারের অ্যাডমিনিস্ট্রেটর জেনারেল অ্যান্ড অফিসিয়াল ট্রাস্টি বিপ্লব রায় এই প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা আবার কাজ করব। প্রাথমিকভাবে দেখে মনে হচ্ছে, এই কামানটি নবাব সিরাজদৌল্লার আমলের। ঢালাই লোহা দিয়ে তৈরি”।
অন্যদিকে, কামান বিশেষজ্ঞ অমিতাভ কারকুনের কথায়, “কামানটি ঠিক কত বড়, তা জানতেই কৌতূহলী আমরা। দৃশ্যমান হয়েছে পাঁচ ফুট। এখনও কামানের ব্যাস কমেনি। এই কামানটি উদ্ধারের পর মিউজিয়ামে সংরক্ষণ করা হবে। সাধারণ মানুষের জন্য প্রদর্শিতও হবে। সিরাজদৌল্লার আমলে ১০ ফুটের কামান কলকাতায় এখনও পাওয়া যায়নি”।