নম্বর বাড়িয়ে স্কুলে চাকরি দেওয়া হয়েছে ৮ হাজারেরও বেশি প্রার্থীকে, আদালতে রিপোর্ট পেশ সিবিআইয়ের, হতবাক বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়
স্কুলে শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী নিয়োগ মামলায় এবার সামনে এল আট হাজারেরও বেশি নাম। আজ, বৃহস্পতিবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে মুখবন্ধ খামে একটি রিপোর্ট পেশ করে সিবিআই। সেই রিপোর্টে ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশন পরীক্ষার উত্তরপত্রে জালিয়াতির তালিকা পেশ করা হয়েছে সিবিআইয়ের তরফে।
সিবিআইয়ের তরফে পেশ করা এই রিপোর্টে বলা হয়েছে যে মাত্র দু’একটি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে বা সাদা খাতা জমা দিয়েই অন্তত আট হাজার জনের নাম রয়েছে নবম-দশম ও একদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষকতা এবং গ্রুপ-সি ও গ্রুপ-ডি পর্যায়ে চাকরিতে নিয়োগের মেধাতালিকায়। এই রিপোর্ট শুনে চমকে যান বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এই আট হাজারের মধ্যে কারা সুপারিশপত্র এবং নিয়োগপত্র পেয়েছেন তাঁদের তালিকা তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
এই রিপোর্টে জানানো হয়েছে যে নবম-দশমে ৯৫২ জন, একাদশ-দ্বাদশে ৯০৭ জন, গ্রুপ সি-তে ৩৪৮১ জন ও গ্রুপ ডি-তে ২৮২৩ জন উত্তরপত্রে জালিয়াতি করে চাকরি পেয়েছেন। সিবিআইয়ের অভিযোগ, মোট ৮,১৬৩ জনকে বেআইনিভাবে চাকরিতে নিয়োগ করা হয়েছে।
রাজ্যে স্কুল শিক্ষক ও অশিক্ষক নিয়োগে উঠেছে দুর্নীতির অভিযোগ। সেই মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় পর্যবেক্ষণ করে বলেন যে নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর নিয়োগের পরীক্ষার উত্তরপত্রে কিছু না লিখেও কোনও কোনও চাকরিপ্রার্থী নম্বর পেয়ে গিয়েছেন। এমনকি, স্কুলের চাকরির জন্য নিয়োগপত্রও পেয়েছেন তারা।
এই নিয়ে গতকাল বুধবার বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “নবম-দশম এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির নিয়োগ পরীক্ষায় প্রচুর সংখ্যক সাদা খাতা জমা দেওয়া হয়েছে। কিছু খাতায় শুধুমাত্র পাঁচ-ছ’টি প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে। তার পরও (ওই চাকরিপ্রার্থীরা) ৫৩ নম্বর পেয়েছেন। এ ছাড়া গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি-র পরীক্ষায়ও একই জিনিস হয়েছে”।
কতজনকে বেআইনি ভাবে চাকরির সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, “৩রা অক্টোবর স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি) এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে বৈঠক করতে হবে। সাদা খাতা জমা দেওয়া প্রার্থীদের মধ্যে কাদের সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছে, তা-ও নিশ্চিত করবে তারা”।