Kolkata

তিলোত্তমার অন্যতম গর্বের নাম হাওড়া ব্রিজ! হাওড়া ব্রিজের ৭৭তম জন্মদিনে সেতুর ইতিহাস ফিরে দেখার পালা

বিজ্ঞাপন

কলকাতা নিজেই একটি ইতিহাস, সুপ্রাচীন একটি শহর। কত কত ইতিহাসের সাক্ষী এই শহর। এই শহরের বুকেই গড়ে উঠেছে কত ঐতিহাসিক স্থাপত্য। শহরের এই ইতিহাস শুরু হলে শেষ করা মুশকিল। শহরের ইতিহাসের কথা উঠলেই প্রথমে মাথায় আসে যার কথা, তা হল হাওড়া ব্রিজ বা রবীন্দ্র সেতু। দীর্ঘ বছর ধরে কত ইতিহাস বয়ে নিয়ে চলেছে এই সুদীর্ঘ সেতু। আজ তার ৭৭তম জন্মদিন। আজ ফের একবার ফিরে দেখার পালা এই সেতুর গভীর ইতিহাস।

বিজ্ঞাপন

কলকাতা ও হাওড়া শহরের মধ্যে সংযোগ সৃষ্টি করতেই এই সেতুর তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। পুরনো হাওড়া ব্রিজ তৈরি হয় ১৮৭৪ সালে। কিন্তু এর অনেক আগে থেকেই এই সেতু তৈরির বীজ বপন করা হয়েছিল। ১৮৫৫-১৮৫৬ আলে ব্রিটিশ প্রশাসন গঙ্গার বুকের উপর একটি ব্রিজ তৈরি করার পরিকল্পনা করে। এই কারণে গঠন হয় একটি কমিটি। এই সময় কলকাতা ও হাওড়া, গঙ্গার দু’প্রান্তেই রমরমিয়ে ব্যবসা চালাচ্ছে ইংরেজরা। তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন কারখান। এই কারণে তখন হাওড়া ও কলকাতার মাঝে যোগাযোগ আরও বাড়ানোর প্রয়োজন হয়ে ওঠে।

বিজ্ঞাপন

ব্রিজের জন্য কমিটি গঠন করা হলেও কোনও এক অজ্ঞাত কারণে ১৮৫৯-৬০ সালে সেই প্রস্তাব আর এগোয় না। এরপর ১৮৬২ সালে ফের বাংলার সরকার ইস্ট ইন্ডিয়া রেলওয়ে কোম্পানির প্রধান ইঞ্জিনিয়ার জর্জ টার্নবুলকে হুগলি নদীর উপর একটি ব্রিজ বানানোর সম্ভাব্যতা যাচাই করার পরীক্ষানিরীক্ষা চালাতে বলা হয়। তিনি ব্রিজের নকশা তৈরি করলেও, ব্রিজ নির্মাণ হয় না।

বিজ্ঞাপন

এর আরও আট বছর পর তৎকালীন বাংলার লেফটেন্যান্ট গভর্নর ঠিক করেন যে ব্রিজ তৈরির দায়িত্ব সরাসরি সরকারকে দেওয়া হবে না। এরর ১৮৭১ সালে একটি ট্রাস্ট তৈরি হয়। এই ট্রাস্টের অধীনেই একটি ভাসমান সেতু তৈরি হয়। ব্রিজটি জাহাজ ও স্টিমার চলাচলের জন্য মাঝ বরাবর খুলে যেত। এই সময় তৈরি হয় ‘হাওড়া ব্রিজ অ্যাক্ট’। এর ফলে এই সেতু পার করার সময় টোল দিতে হত। এই টোলের টাকাতেই ব্রিজের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলত। এরপর ১৮৭৪ সালে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয় এই ব্রিজ। ব্রিজ তৈরির পরিকল্পনার প্রায় ১৯ বছর পর তা বাস্তব রূপ পায়।

বিজ্ঞাপন

তিলোত্তমার অন্যতম গর্বের নাম হাওড়া ব্রিজ! হাওড়া ব্রিজের ৭৭তম জন্মদিনে সেতুর ইতিহাস ফিরে দেখার পালা 2

এরপর ১৯৪৫ সালে পুরনো ব্রিজটি বদলে বর্তমানের বহির্বাহু সেতুটি উদ্বোধন করা হয়। ১৯৬৫ সালে ১৪ জুন এই ব্রিজের নাম পরিবর্তন করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামানুসারে ব্রিজের নতুন নাম হয় রবীন্দ্র সেতু। বঙ্গোপসাগরের প্রবল ঝড়-ঝঞ্ঝা সহ্য করতে সক্ষম এই ব্রিজ। এই হাওড়া ব্রিজে কিন্তু একটিও নাটবল্টু নেই। হ্যাঁ শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও, এটাই সত্যি। লোহাকে বেঁকিয়ে নাটবল্টুর মতো করে ব্যবহার করা হয়েছে এই ব্রিজে।

বিজ্ঞাপন

এই ব্রিজ তৈরিতে প্রায় ২৬৫০০ টন লোহা লাগে, এর ২৩০০০ টন লোহাই এসেছিল টাটা আয়রন অ্যান্ড স্টিল কোম্পানি থেকে। এই ব্রিজে কোনও পিলার নেই। ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে এই ব্রিজ। বর্তমানে প্রতিদিন এই ব্রিজের উপর দিয়ে প্রায় দেড় লক্ষ মানুষ ও এক লক্ষ গাড়ি চলাচল করে।

বিজ্ঞাপন
Back to top button

Discover more from Khabor24x7

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading