পাক সেনা প্রধানের ‘শান্তিপূর্ণ’ বার্তার পরদিনই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন ইমরানের দেশের, গোলাবর্ষণে শহিদ ভারতীয় সেনা
গত মঙ্গলবারই পাক সেনা প্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া সগর্বে ঘোষণা করেন যে পাকিস্তান নাকি শান্তিপ্রিয় দেশ। কিন্তু সেই ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা না কাটতেই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করল সেই দেশ। গত বুধবার কোনওরকম প্ররোচনা ছাড়াই ফের গুলিবর্ষণ করতে থাকে পাকিস্তান। এর জেরে শহিদ হন এক ভারতীয় সেনা।
জানা গিয়েছে, গতকাল নিয়ন্ত্রণ সীমানার রাজৌরি জেলার কেরি বাত্তাল সেক্টরে হঠাৎই যুদ্ধবিরতির মধ্যেই হামলা চালায় পাক জঙ্গি। পাল্টা জবাব দেয় ভারতীয় সেনাও। কিন্তু গুলিতে গুরুতর আহত হন এক ভারতীয় সেনা। প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। চিকিৎসা করলেও শেষ পর্যন্ত তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
এদিকে গত মঙ্গলবার খাইবার-পাখতুনখোয়ার রিসলপুরে অনুষ্ঠিত পাক বায়ু সেনা আশগার খান অ্যাকাডেমি অনুষ্ঠানে পাক সেনা প্রধান জেনারেল বাজওয়া বলেন যে পাকিস্তান পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও শান্তিপূর্ণভাবে বাঁচায় বিশ্বাসী। তাঁর দাবী, পাকিস্তান একটি শান্তিপ্রিয় দেশ যে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্তরে শান্তির জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। তিনি এও বলেন যে বাহ্যিক কোনও শক্তি যদি এই শান্তিপ্রিয়তার ভুল ব্যাখ্যা করে এটা ভাবে যে পাকিস্তান দুর্বল, তাহলে তাঁরা ভুল করবে।
তাঁর এই ‘শান্তিপূর্ণ’ বার্তার পরদিনই পাকিস্তান প্রমাণ করে দিল তারা ঠিক কতটা ‘শান্তি’ ভালোবাসে। যুদ্ধবিরতির মধ্যেই কোনও প্ররোচনা ছাড়াই ভারতে হামলা করা তারা। এই নিয়ে এই বছরে চারবার যুদ্ধবিরতি নীতি লঙ্ঘন করল পাকিস্তান।
লোকসভার পক্ষ থেকে জানানো হয় যে গত তিন বছরে ১০,৭৫২ বার ভারতের উপর হামলা করেছে পাকিস্তান। এর জেরে গত তিন বছরে ৭২ জন নিরাপত্তারক্ষী ও ৭০ জন সাধারণ মানুষ মারা গিয়েছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি জানান যে ২০১৮-২০২০ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রিত সীমানারেখায় পাকিস্তানী হামলা ও গুলিবর্ষণে ৩৬৪ জন নিরাপত্তারক্ষী ও ৩৪১ জন সাধারণ মানুষ আহত হয়েছেন। এও জানা গিয়েছে যে, গত তিন বছরে জম্মু-কাশ্মীরে ১৪৫২টি জঙ্গি হামলা হয়েছে এবং এর জেরে ২৩৩ জন নিরাপত্তারক্ষী ও ১১৫ জন সাধারণ মানুষ মারা গিয়েছেন। গত তিন বছরে ৬৩৫ জন জঙ্গির বিনাশ করেছে ভারত।
কেন্দ্রীয়মন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে যে জঙ্গি হামলার প্রতি ভারত জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। তাছাড়া, কোনওরকম গুলিবর্ষণের জবাবও যে ভারত কঠোরভাবেই দেবে, তাও বলেন তিনি। এও জানান যে, ভারতের এই কঠোর নীতিগ্রহণের ফলেই গত তিন বছরে ভারতে জঙ্গি হামলা অনেকটা কমেছে।