গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের সময় ভারতীয় সেনার তাড়ায় ঠাণ্ডা জলে ডুবে মৃত্যু হয় ৩৮ জন চীনা সেনার, দাবী রিপোর্টের
২০২০ সালের ১৫ই জুন লাদাখ সীমান্তে গালওয়ান উপত্যকায় চীনা সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় ভারতীয় সেনা। এই সংঘর্ষে শহিদ হন ২০ জন ভারতীয় সেনা। বহু চীনা সেনারও মৃত্যু হয় এই সংঘর্ষে। কিন্তু বেজিং জানায় যে সামান্য সংখ্যক সেনার মৃত্যু হয়েছে তাদের।
সেদিনের সেই সংঘর্ষ নিয়ে এবার এক চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট পেশ করল অস্ট্রেলিয়ার একটি সংবাদপত্র। ‘দ্য ক্ল্যাক্সন’ নামের এই সংবাদপত্রে দাবী করা হয়েছে যে সেদিন গভীর রাতে ভারতীয় সেনাদের তাড়ায় গালওয়ান নদীর ঠাণ্ডা জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছিল ৪২ জন চীনা সেনার।
২০২১ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে চীনের তরফে জানানো হয় যে গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের কারণে তাদের চার জন সেনার মৃত্যু হয়। তাদের মরণোত্তর সামরিক সম্মান দেয় বেজিং। কিন্তু মনে করা হয় যে সেদিনের সংঘর্ষে অনেক বেশি চীনা সেনার মৃত্যু হয়। কূটনৈতিক কারণে তা সামনে আনে নি বেজিং।
অস্ট্রেলিয়ান ‘দ্য ক্ল্যাক্সন’ সংবাদপত্রের রিপোর্ট অনুযায়ী, সংঘর্ষের রাতে ভারতীয় সেনার তাড়া খেয়ে পালানোর সময় গালওয়ান নদীতে ডুবে মৃত্যু হয়েছিল ৩৮ জন চীনা সেনার। ২০২০ সালের ১৫ জুন একটি অস্থায়ী ব্রিজ নির্মাণ ঘিরে সংঘর্ষ শুরু হয়। পালটা সীমান্তে ‘বাফার জোন’ নির্মাণের কাজ শুর করে চীন।
এরপর ৬ই জুন ৮০ জন পিএলএ সৈন্য ভারতের নির্মিত সেতুটি ভেঙে ফেলতে আসে। তবে সেই সময় আলোচনার মাধ্যমে একরকম সমাধান হয়। স্থির হয় ‘বাফার জোন’ অতিক্রম করে চীনা সেনা ফিরে যাবে। কিন্তু চীন সেই প্রতিশ্রুতি রাখেনি।
উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই ১৫ই জুন বিতর্কিত এলাকা পরিদর্শন করতে যান কর্নেল সন্তোষবাবু ও তাঁর দল। সেখানে আগের থেকেই উপস্থিত ছিল কর্নেল কি ফ্যাবাওয়ের নেতৃত্বে চীনা সেনা। ‘দ্য ক্ল্যাক্সন’-এর রিপোর্টে দাবী করা হয়েছে যে ফ্যাবাও নিজের ফৌজকে আচমকাই ভারতীয় সেনার উপর আক্রমণের নির্দেশ দেয়। এরপরই ফ্যাবাওকে আটক করে ভারতীয় সেনা।
তাদের কর্নেলকে বাঁচানোর জন্য ভারতীয় সেনার সঙ্গে সংঘাতে জড়ায় চীনা ব্যাটেলিয়ন। এই সময় স্টিলের পাইপ, কাঁটা লাগানো লাঠি দিয়ে ভারতীয় সেনার উপর হামলা করে চীনা ফৌজ। জানা যায়, এই সংঘর্ষের সময় তিনজন চীনা সেনার মৃত্যু হয়।
এরপরই পাল্টা আক্রমণ করতে থাকে ভারতীয় সেনা। এর জেরে পিছু হটতে থাকে চীনা সেনা। পালাতে বাধ্য হয় তারা। পালানোর সময় শীতবস্ত্র পরার সময়টুকু পায় নি তারা। নিজের এলাকায় ফিরতে রাতের অন্ধকারে নদীর ঠাণ্ডা জলে ঝাঁপ দিতে বাধ্যহয় চীনা সেনা। এর জেরে তীব্র ঠাণ্ডায় মৃত্যু হয় অনেকেরই। মোট ৪২ জন চীনা সেনার মৃত্যু হয় বলে দাবী।