চাপের মুখে যোগীর রাজ্যে দুর্গাপুজোর অনুমতি মিললেও দিল্লিতে কেজরিওয়ালের থেকে মিলছে না অনুমতি
দুর্গাপুজো আসন্ন, বলা যায় প্রায় দোরগোড়ায় কড়া নাড়ছে। অনেক টালবাহানার পর উত্তরপ্রদেশে বাঙালি সম্প্রদায়ের অনুরোধ মেনে অবশেষে নিজের রাজ্যে দুর্গাপুজোর অনুমতি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তার ফলে তাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সেখানকার বাঙালি সম্প্রদায়। করোনার সবরকম বিধিনিষেধ মেনেই করতে হবে তা বারবার স্মরণ করিয়েছেন যোগী। এদিকে বাংলাতেও দুর্গাপুজোর আড়ম্বর শুরু হয়েছে নিয়ম মেনেই। করোনা পরিস্থিতিতেও মাতৃবন্দনার প্রস্তুতি চলছে পাড়ায় পাড়ায়। কিন্তু রাজধানী দিল্লিতে এবছর পুজোর চিত্রটা একেবারেই আলাদা। পুজোর আর ১৫দিনও বাকি নেই, কিন্তু এখনও দুর্গাপুজোর অনুমতিই মেলেনি মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের থেকে। যার জেরে সি আর পার্ক-সহ আরও নানান জায়গায় প্যান্ডেলের বাঁশ পর্যন্ত পড়েনি।
পার্কে পুজোর জন্য অনুমতি নিতে হয় কর্পোরেশনের থেকে কিন্তু সেই অনুমতি এখনও মেলেনি বলেই জানিয়েছেন পুজোর উদ্যোক্তারা। ফলে রাজধানীতে এ বছর আদৌ দুর্গাপুজো হচ্ছে কি না, এ নিয়ে ধন্ধে পড়েছেন সেখানকার বাঙালি সম্প্রদায়। তবে সি আর পার্ক কালীবাড়িতে পুজোর অনুমতি মিললেও সেই পুজোয় কোনও দর্শনার্থী উপস্থিত থাকতে পারবেন না জানা গিয়েছে। স্থানীয় কেবল চ্যানেলে ভার্চুয়াল পুজো দেখানো হবে। দক্ষিণ দিল্লির কালীবাড়িতে পুজো হবে কি না তা নিয়েও মতভেদ আছে। এই পুজোর অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ছিলেন প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়।
এদিকে পূর্ব দিল্লির একাধিক পুজো কমিটি ব্যাঙ্কয়েট হল ভাড়া করেছেন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য। তাঁদের দাবী, অন্তত একদিন ঘট পুজোর অনুমতি যাতে পাওয়া যায়। সি আর পার্কের মৃৎশিল্পী নলিনী নাথ জানান, প্রত্যেক বছর কমপক্ষে ৫০টি প্রতিমা গড়েন তিনি। কিন্তু এ বছর মাত্র ৬টি প্রতিমার বায়না পেয়েছেন। তার মধ্যে একটি সি আর পার্ক কালীবাড়ির ও বাকি পাঁচটি যাবে গুরুগ্রামে। ঠাকুরের উচ্চতাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। বেদি ও চালা মিলিয়ে পাঁচ ফুটের বেশী উঁচু ঠাকুর বানানো যাবে না।
অন্যদিকে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা মনে করছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অরবিন্দ কেজরিওয়াল রাজনৈতিক বন্ধু হলেও তাঁদের প্রশাসন চালানোর কায়দা ভিন্ন। এদিকে করোনা পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও যখন মমতা যখন রাজ্যের ক্লাবগুলিকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দিচ্ছেন, সেখানে কেজরিওয়াল সরকার টাকা দেওয়া তো দূর হস্ত, সংক্রমণের কথা ভেবে পুজোর অনুমতিই দিচ্ছেন না।
উল্লেখ্য, অতিমারির কথা মাথায় রেখেই মহারাষ্ট্রের প্রধান উৎসব গণেশ পুজোর ক্ষেত্রে অনুমতি দেন নি উদ্ধব ঠাকরে সরকার। কিন্তু কেরলে ওনামের সময় স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করায় লাফ দিয়ে বেড়েছে করোনা সংক্রমণ। অনেকের মতে, পরিস্থিতির ভয়াবহতা এড়াতে সঠিক পদক্ষেপই নিয়েছেন কেজরিওয়াল সরকার কিন্তু সেদিক থেকে দেখতে গেলে মমতার সরকার এই বিষয়ে অনেকটাই গা ছাড়া মনোভাব দেখাচ্ছেন।