বিজেপিকে সরানোই উদ্দেশ্য, বিহারে চরম শত্রু আরজেডির সঙ্গে জোট বাঁধল বামফ্রন্ট!

শিয়রে বিধানসভা নির্বাচন তাই জোট বাঁধল আরজেডি-বাম! এ যেন উলটপুরাণ! শুধুমাত্র বিজেপির জয়যাত্রাকে রুখে দেওয়ার জন্য একসময়ের পরম শত্রু লালুপ্রসাদ যাদবের (Laluprasad Yadav) আরজেডির (RJD) সঙ্গে জোট করছে বামেরা(CPI)! জানা গিয়েছে যে বাম নেতাদের সঙ্গে ইতিমধ্যেই আরজেডির রাজ্য সভাপতির একপ্রস্থ কথাবার্তা হয়ে গিয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে আরজেডি- কংগ্রেস এবং অন্যান্য ছোট দলগুলোর পাশে দেখা যাবে কানাহাইয়া কুমারকে (Kanhaiya Kumar)!
গতবছর লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি (BJP) বিরোধী যে মহাজোট তৈরি হয়েছিল সেখানে ঠাঁই পাওয়ার চেষ্টা করেছিল বামফ্রন্ট। কিন্তু সেবার লালু প্রসাদ যাদব নিজে বামফ্রন্টের বিরোধিতা করেছিলেন কারণ তার ধারণা ছিল কানহাইয়া কুমার কে যদি এই জোটে নেওয়া হয় তাহলে তার পুত্র তেজস্বী যাদব এর গুরুত্ব অনেকখানি কমে যাবে। এমনকি বেগুসরাই থেকে কানহাইয়া কুমারের বিরুদ্ধে প্রার্থীও দাঁড় করিয়েছিল আরজেডি।
কিন্তু এবারের গল্পটা একদম ভিন্ন। সিপিআইয়ের হয়ে কানহাইয়া এবার বিহারের ভোটের প্রার্থী হচ্ছেন না। এছাড়াও ব্যক্তিগত স্বার্থের থেকে এখন বিজেপিকে হারানোই মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে দুই বিরোধী শিবিরের। তাই এবার জোট বদ্ধ হয়ে গেরুয়া শিবিরের জয়যাত্রা যেনতেন প্রকারে থামাতে উদ্যোগী হয়েছে আরজেডি এবং লাল শিবির। গত ২৬ আগস্ট দুই শিবিরের মধ্যে জোট নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হয়ে গিয়েছে। আরও জানা গিয়েছে, আরজেডি-কংগ্রেস-ভিআইপি এবং আরএলএসপির (RLSP) পাশাপাশি সিপিআই, সিপিএম এবং সিপিআইএম(এল)-ও এবার মহাজোটে শামিল হতে চলেছে।
এছাড়াও ভোটে জয়লাভ করলে তেজস্বী যাদব কে মুখ্যমন্ত্রী করতেও রাজি হয়েছেন বাম নেতারা। এই বিরোধী জোটের অন্যতম তারকা প্রচার প্রার্থী হতে পারেন কানহাইয়া কুমার। কিন্তু যেহেতু তিনি এখন সিপিআইয়ের সর্বভারতীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তাই আরজেডিকে সরকারিভাবে সিপিআই এর কাছে আবেদন জানাতে হবে। অন্যদিকে বেগুসরাই, মধুবনি, নালন্দা, বক্সার, পূর্ব চম্পারণের মতো এলাকায় বামেদের বহু সক্রিয় ক্যাডার আছেন। যা আরজেডিকে সাহায্য করবে। তবে আসন সমঝোতা নিয়ে পরবর্তীকালে গন্ডগোল বাড়তে পারে কারণ এই মহাজোটে এখন শামিল হয়ে গিয়েছেন অনেকেই।
২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভায় আরজেডি লড়বে ১৬০-৬৫টি আসনে। বাকি গুলিতে কংগ্রেস লড়বে। প্রাথমিকভাবে এটাই স্থির হয়েছিল। এবার নিজেদের ভাগের এই আসন থেকেই আরজেডিকে ভাগ দিতে হবে বামদলগুলিকে। অন্যদিকে কংগ্রেসকে আসন ছাড়তে হবে উপেন্দ্র কুশওয়াহার আরএলএসপি, সিপিআই (CPI) এবং সিপিএমের (CPIM) জন্য। বামেদের জন্য হিসাব অনুযায়ী বরাদ্দ থাকছে মাত্র ১০ থেকে ১৫ টি আসন। তবে এইভাবে লালুপ্রসাদের দলের সঙ্গে সমঝোতা করে নির্বাচনী বৈতরণী কি পার করতে পারবে বামফ্রন্ট? উঠছে প্রশ্ন।