মানস সরোবর যাত্রাপথ নেপালের মধ্যে পড়ছে না, স্পষ্ট জানাল ভারত
ভারত-নেপাল দ্বন্দ্বে এবার কড়া অবস্থান নিল দিল্লি। শনিবার সকালে ধারচুলা থেকে লিপুলেখ পর্যন্ত সদ্য সংস্কার করা রাস্তার উদ্বোধন সম্পর্কে অসন্তোষ প্রকাশ করে ওই রাস্তা নেপালের ভূমিখণ্ডের উপর দিয়ে গিয়েছে বলে দাবি করে সে দেশের বিদেশ মন্ত্রক। কিন্তু এই রাস্তা তৈরি নিয়ে কাঠমান্ডুর আপত্তি খারিজ করল ভারত। জানিয়ে দেওয়া হল, ওই অঞ্চল ভারতেরই অন্তর্ভুক্ত।
গত শুক্রবার ৮০ কিমি দীর্ঘ এই রাস্তার উদ্বোধন করেন ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, কৈলাস-মানস সরোবর যাত্রার প্রাচীন তীর্থপথকেই অনুসরণ করেছে নতুন সড়ক। প্রচলিত সিকিম ও নেপাল হয়ে তিব্বতের ওই হ্রদে পৌঁছানোর দুর্গম পথের তুলনায় এই রাস্তায় অনেক তাড়াতাড়ি মানস পৌঁছানো যাবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রক। আরও জানানো হয়েছে, তীর্থযাত্রী ছাড়াও এই রাস্তা ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়ক হবে। কিন্তু বাদ সাধে নেপাল সরকার। নেপাল সরকারের তরফে যুক্তি দেখানো হয়েছে যে, ১৮১৬ সালের সগৌলি চুক্তি অনুযায়ী কালী নদীর পূর্ব দিকের সমগ্র ভূখণ্ড নেপালের সম্পত্তি, যার মধ্যে পড়ছে লিম্পিয়াধুরা, কালাপানি ও লিপু লেখ। এদিকে, ভারতের সদ্য প্রকাশিত মানচিত্রে কালাপানিকে উত্তরাখণ্ডের অংশ দেখানো হয়েছে, যা নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছে নেপাল সরকার। এই নিয়ে আলোচনায় বসতে চাইলে নেপালের যুক্তি উড়িয়ে দিয়ে দিল্লি দাবি করেছে, নতুন মানচিত্র ত্রূটিহীন এবং তাতে দেখানো ভারতীয় ভূখণ্ডে কোনও ভুলচুক হয়নি। এই বিষয়ে ২০১৯ সালে নয়াদিল্লিকে একটি নোট পাঠিয়ে নেপাল জানায়, নতুন সড়ক তৈরির একতরফা সিদ্ধান্ত ভারত-নেপাল কূটনৈতিক সম্পর্কের পরিপন্থী এবং এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী স্তরে আলোচনা প্রয়োজন। কাঠমান্ডুর দাবি, ঐতিহাসিক মানচিত্র, চুক্তি ও নথির ভিত্তিতেই সীমান্ত সমস্যার কূটনৈতিক সমাধান করা হোক।
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরবিন্দ শ্রীবাস্তব বলেন, ভারত ও নেপালের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে বরাবরই সুস্থ সম্পর্ক বজায় রয়েছে। এই নিয়ে কাঠমান্ডুর কোনও বক্তব্য থাকলে তা আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নিতে আগ্রহী কেন্দ্র। এই প্রসঙ্গে বিদেশ সচিবদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সংশয় দূর করা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন। তবে সে সবই বর্তমান লকডাউন পরিস্থিতির অবসান হওয়ার পরে হবে।