টাটা গোষ্ঠীর অন্য এক রাজপুত্র, টিভি ও বইকেই সঙ্গী করে দু কামরার ফ্ল্যাটে ফোন ছাড়াই সকলের থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছেন রতন টাটার আপন ভাই জিমি টাটা

তিনিও টাটা গোষ্ঠীর একজন অংশীদার। তবে এই রাজত্বে তাঁর কোনও আগ্রহ নেই। তাঁর সারাটা দিন কাটে একটি দু’কামরার ফ্ল্যাটে আর সঙ্গী বলতে একটি টিভি ও প্রচুর বই।
মুম্বইয়ের কোলাবার হ্যাম্পটন কোর্টর ছ’তলার ছোট ফ্ল্যাটটিই তাঁর ‘রাজপ্রাসাদ’। তবে সেখানে সবার প্রবেশাধিকার নেই। বাছাই করা পরিচিতরাই তাঁর সঙ্গ লাভের অনুমতি পান। তাঁর খোঁজ পেতে চাওয়া সাংবাদিকরাও কোনও পাত্তা পান না।
তাঁকে ফোন করে আগের থেকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়ারও কোনও উপায় নেই। কারণ তিনি ফোন ব্যবহার করেন না। তবে টাটা গোষ্ঠীতে কী হচ্ছে না হচ্ছে, তা সব তাঁর নখদর্পণে। কোনও গোলমাল দেখলেই কড়া ভাষায় চিঠি লিখে জবাব তলব করেন তিনি।
জিমি নাভাল টাটা রতন নাভাল টাটার আপন ভাই। রতন টাটার থেকে তিনি মাত্র দু’বছরের ছোটো। রতন টাটা যখন জেআরডি টাটার অধীনে কাজ শুরু করেন, সেইসময় জিমিকে হাতে ধরে কাজ শেখান তাঁর বাবা নাভাল টাটা। টাটা গোষ্ঠীর কাপড়ের ব্যবসার ভার নিয়েছিলেন তিনি। তবে সেই ব্যবসা কিছুদিনের মধ্যেই ডুবে যায়।
একদিকে যখন রতন টাটাকে নিয়ে নানান সংবাদমাধ্যমে নানান খবর করা হয়, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে জিমি টাটার কোনও খবরই পান না কেউ। রতন টাটা ও জিমি টাটা তাদের বাবা নাভাল টাটার প্রথম স্ত্রীয়ের সন্তান। ১৯৪৮ সালে নাভালের সঙ্গে তাঁর প্রথম স্ত্রীয়ের বিচ্ছেদ হয়। এরপর রতনের দায়িত্ব নেন তাঁর ঠাকুমা নাভাজবাই টাটা। তবে জিমি তাঁর বাবার দ্বিতীয় বিয়ের সংসারেই ছিলেন কী না, তা অবশ্য জানা যায় না।
কিছু বছর কয়েক আগে এক সাংবাদিক জিমির খোঁজ নিতে যান। একাধিকবার নানা ভাবে তাঁর পরিচয়পত্র যাচাই করার পরই তাঁকে ঘরে ঢোকার অনুমতি দেন জিমি। জিমির ঘরের বর্ণনা দিয়ে ওই সাংবাদিক লেখেন, “ফাইল, স্যুটকেশ আর বই জড়ো করা চারপাশে। ঘরে একটি টিভি আছে। সেটি একটুকরো কাপড় দিয়ে ঢাকা দেওয়া”।
সেই সাংবাদিক জিমিকে প্রশ্ন করেছিলেন যে তাঁর পর তাঁর এই বিশাল অংশীদারি কাকে দিয়ে যাবেন তিনি। এর উত্তরে জিমি জানিয়েছিলেন, “কাউকে দিয়ে যাব না। ওই সম্পত্তিও ওরা নিজেরাই টানাটানি করে ঝগড়া করে ভাগ করে নেবে। এখন যেমন করছে”।
নিজেকে আড়ালে রাখতে চাওয়া এই মানুষটাকে হঠাৎই খবরে এনে দিয়েছেন হর্ষ গোয়েঙ্কা। টুইটারে জিমির একটি ছবি দিয়ে তিনি লেখেন, “ইনি রতন টাটার ভাই জিমি টাটা। দারুণ স্কোয়াশ খেলেন। যত বার ওঁর সঙ্গে খেলেছি, তত বারই হারিয়ে দিয়েছেন আমায়। তবে টাটার অন্য পুত্রদের মতো এঁর ব্যবসায় আগ্রহ নেই। মুম্বইয়ের কোলাবার একটি দু’কামরার ফ্ল্যাটে নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকেন”।