মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘বহিরাগত’, বিতর্কিত দাবী কেএলও সুপ্রিমো জীবন সিংহের, রাষ্ট্রদোহীতার মামলা দায়ের
এতদিন পর্যন্ত তিনি বিরোধী দলের অনেককেই ‘বহিরাগত’ তকমা দিয়েছেন। এবার সেই তকমা লাগল তাঁর নিজের গায়েই। কেএলও অর্থাৎ নিষিদ্ধ সংগঠন কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশনের সুপ্রিমো জীবন সিংহ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দাগলেন ‘বহিরাগত’ বলে। ফের একবার উঠে এল বঙ্গভঙ্গের ইস্যু।
বঙ্গভঙ্গের দাবীকে সমর্থন জানান কেএলও সুপ্রিমো। এই নিয়ে নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বহিরাগত তকমা দিলেন তিনি। নিজের গোপন ডেরা থেকে এক দীর্ঘ ভিডিও বার্তা শেয়ার করেছেন জীবন সিংহ। এরপরই এ নিয়ে সতর্ক হয়েছে প্রশাসন। জীবন সিংহের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে রাষ্ট্রদোহের মামলাও। নবান্নের অন্দরেও সতর্কতা আরও বাড়ানো হয়েছে।
তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও কেএলও প্রধান জীবন সিংহের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদোহের মামলা দায়ের করা হয়েছে। এবার আবার নতুন করে তা করা হল। একুশের নির্বাচনের পরই আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বারলা উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করার দাবী তোলেন। তবে সব মহল থেকেই সেই দাবী নাকোচ করে দেয়া হয়। কিন্তু এবার নিজের গোপন ডেরা থেকে জন বারলার এই দাবীকে সমর্থন জানিয়ে ভিডিও পোস্ট করলেন জীবন সিংহ। এর জেরে জন বারলার দাবী আরও জোরালো হয়।
জীবন সিংহের কথায়, “ভারত স্বাধীন হওয়ার আগে এবং পরে কোচ সাম্রাজ্য স্বাধীন রাজ্য ছিল। পরে ভারতবর্ষের সঙ্গে যুক্ত হয় এই ভূমি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে সেখানকার ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির জেরে পূর্ব বঙ্গের বাঙালিরা এই ভূমিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন”। তাঁর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কেএলও সুপ্রিমোর দাবী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ‘বহিরাগত’ এবং বঙ্গভঙ্গ নিয়ে তিনি যে অভিযোগ তুলছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তাঁর সেই দীর্ঘ বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রীকে তিনি একাধিকবার ‘বহিরাগত’ বলে দেগেছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর অনুযায়ী, জীবন সিংহ এই মুহূর্তে মায়ানমারের আশেপাশে কোনও জায়গায় গা ঢাকা দিয়েছে রয়েছে। তাঁর অবস্থান জানতে উদগ্রীব পুলিশ। এই কারণে তাঁর সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিওর সূত্র ধরে আইপি অ্যাড্রেস খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। রাষ্ট্রদোহ ধারায় মামলা দায়ের করে তদন্তও শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন- ‘মোদীর হাতে-পায়ে ধরতে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী’, মমতার দিল্লি সফর প্রসঙ্গে মন্তব্য দিলীপ ঘোষের
কিছুদিন আগেই উত্তরবঙ্গের দুই তৃণমূল নেতা বিনয়কৃষ্ণ বর্মন ও পার্থপ্রতিম রায়কে হুমকি চিঠি পাঠানো হয় কেএলও-র তরফে। এরপরই পার্থপ্রতিম রায়ের বাড়িতে হামলা হয়। এরপর আবার জীবন সিংহের এই বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য আবার নতুন করে তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের করা হল।