সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির কাশ্মীরের পুলওয়ামায়! কাশ্মীরি পণ্ডিতের মরদেহে কাঁধ দিলেন মুসলিম ভাইরা, করলেন শেষকৃত্যের আয়োজনও

‘বিবিধের মাঝে মিলন মহান’, হ্যাঁ এটাই আমাদের দেশ ভারতবর্ষ। যেখানে নানান ভাষাভাষী, নানান ধর্মের লোকজন একসঙ্গে বসবাস করে। ধর্মের ভিত্তিতে কোনও কোনও সময় অশান্তি দেখা গেলেও কিন্তু ভারতবাসীর মধ্যে ঐক্যতার অভাব নেই। আর তা আরও একবার প্রমাণিত হল তাও আবার সেই ভূস্বর্গ কাশ্মীরে।
মৃত্যু হয়েছে কাশ্মীরি পণ্ডিতের। আর তাঁর শেষকৃত্যের আয়োজন করলেন মুসলিম প্রতিবেশীরা। তাঁর মরদেহে দিলেন কাঁধ। হিন্দু ধর্মমতে কাঁধে করে মরদেহ বয়ে নিয়ে গিয়ে শেষকৃত্য করলেন মুসলিম ভাইয়েরা। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নজিরের সাক্ষী থাকল কাশ্মীরের পুলওয়ামা শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরের ওয়াহিবাগ নামের গ্রামটি।
জানা গিয়েছে মঙ্গলবার মৃত্যু হয় ৭০ বছর বয়সি ওই কাশ্মীরি পণ্ডিত প্যারীলালের। দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় সুপরিচিত ছিলেন তিনি। নানান আপদে-বিপদে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে অনেক মানুষ তাঁর থেকে সাহায্য পেয়েছেন। তাঁর মৃত্যুর পরে শোকের ছায়া নেমে আসে এলাকায়।
প্যারীলালের পরিবারে তেমন কোনও সদস্য নেই যিনি গুছিয়ে শেষকৃত্যের কাজকর্ম করতে পারবেন। সেই কারণে এগিয়ে আসেন তাঁর বন্ধু ও প্রতিবেশীরা যারা সকলেই মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। মনুষত্ব্যের কাছে ধর্মের কোনও জায়গা থাকে না। মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজনই প্যারীলালের মরদেহ কাঁধে করে করে যান শ্মশানে। কাঠ জোগাড় করে চিতা সাজান তারাই। শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন তারা।
ওয়াহিবাগ গ্রামের সদস্য মহম্মদ রমজান বলেন এই বিষয়ে বলেন, “উনি আমাদেরই লোক ছিলেন। আমরা কখনও কাশ্মীরি পণ্ডিত বলে আলাদা চোখে দেখিনি ওঁকে। আমরা সবসময় একসঙ্গে ছিলাম সুখে-দুঃখে। তাই আমরাই ওঁর শেষকৃত্যের সমস্ত ব্যবস্থা করেছি”।
প্যারীলালের পরিবার জানিয়েছে তারা সকলের কাছে কৃতজ্ঞ। তারা বলেন, ওই গ্রামের বেশিরভাগ বাসিন্দাই মুসলিম। কিন্তু তবুও সবসময় তাদের পাশে থেকেছেন সকলে। কোনও ধর্মীয় অভ্যাসে কেউ কোনওদিন বাধা দেন নি। প্যারীলালের শেষকৃত্যের কাজও সকলে মিলে সসম্মানে করেছেন।