৫২ বছর আগে ব্যবসার জন্য দেশের প্রথম সুপার কম্পিউটার কিনেছিলেন ‘এশিয়ান পেন্টস’-এর মালিক, সেই ব্যবসাই আজ প্রতি দেড় বছর অন্তর বাড়ে দ্বিগুণ
বিশ্বের মধ্যে এটিই একমাত্র সংস্থা জার ব্যবসা প্রতি দেড় বছর অন্তর বেড়ে দ্বিগুণ হয়। এই সংস্থার মালিক একজন ভারতীয়। তিনিই প্রথম যিনি দেশের প্রথম সুপার কম্পিউটার কিনেছিলেন। তাঁর নাম চম্পকলাল চোক্সি। ১৯৭০ সালে আট কোটি টাকা খরচ করে তিনি কিনেছিলেন সুপার কম্পিউটার।
ব্যবসার কাজে কেনা সেই সুপার কম্পিউটারের দ্বারাই তিনি নিজের ব্যবসাকে এক উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যান। তাঁর রঙের কোম্পানি ‘এশিয়ান পেন্টস’ তখন বছরে ২৩ কোটি টাকা আয় দেয়। কোম্পানি প্রাইভেট থেকে পাবলিক লিমিটেডে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এখানেই থেমে থাকতে চান নি তিনি। নিজের ব্যবসাকে আর সফল করার ইচ্ছা জাগে তাঁর মনে।
তিনি বুঝেছিলেন যে গ্রাহক কখন কী চাইছেন, কোন রঙের চাহিদা কোন এলাকায় বেশি, কোন রঙ কেমন সময় কতটা ভালো বিক্রি হয়, তা জানতে পারলেই কেল্লাফতে। আর এই কাজ করবে সুপার কম্পিউটার। সমস্ত এলাকা থেকে নানান তথ্য গ্রহণ করে এই কম্পিউটারে ভরে দেওয়া হবে। এবার সেই কম্পিউটারই অঙ্ক কষে দেখিয়ে দেবে কোন এলাকার গ্রাহক কোন রঙ কোন সময়ে কিনবেন।
খরচ কমানোর জন্য তিনি ডিস্ট্রিবিউটার ও হোলসেলারদের মাঝখান থেকে সরিয়ে দেন। ডিলারদের কাছে সরাসরি পৌঁছে দিতে থাকেন রঙ। কিন্তু ডিলাররা এত রঙ মজুত রাখবেন কী করে? এরও একটা সমাধান করলেন চম্পকলাল। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন প্রতিদিন দিনে তিন ঘণ্টা অন্তর চারবার রঙ নিয়ে গাড়ি পৌঁছবে ডিলারদের কাছে। কোন রঙ কতটা পরিমাণে কোন ডিলারের দরকার, এর হিসাব রাখবে সুপার কম্পিউটার।
গত ৫০ বছর কোন রঙের চাহিদা সর্বাধিক, কোন রঙ কত পরিমাণে বিক্রি হয়, কোন রঙ কোন আকারের টিনে ভরা হবে, এসবের হিসাব কষে দেয় সেই সুপার কম্পিউটার। এর ফলে ভুলের কোনও অবকাশ নেই। এর জেরে ডিস্ট্রিবিউটার ও হোলসেলারদের পাশ কাটিয়ে ডিলারদের রঙের দামে ৩ শতাংশ দিয়ে বাকি ৯৭ শতাংশই লাভ করতে পেরেছে ‘এশিয়ান পেন্টস’।
এর জেরে এই সংস্থা প্রতি তিন বছরে নিজেদের ব্যবসা দ্বিগুণ বাড়াতে পারত। তবে গত দেড় বছরে সেই রেকর্ডও ভেঙেছে। এখন গত দেড় বছ্রেই এই সংস্থা তাদের ব্যবসা দ্বিগুণ বাড়ায়। গত ছয় দশক ধরে প্রতি বছর ২০ শতাংশ উপার্জন বেড়েছে এশিয়ান পেন্টসের। আর এর সব কৃতিত্ব যায় চম্পকলাল চোক্সিকে কারণ তাঁর ভাবনাতেই তিনি সুপার কম্পিউটার এনেছিলেন দেশে তাও আবার ৫২ বছর আগে। তিনি হয়ত আজ আর নেই, কিন্তু তাঁর ব্যবসা আজও রমরমিয়ে দুরন্ত গতিতে এগিয়ে চলেছে।