দেশ

নজিরবিহীন! কাজকর্ম খতিয়ে দেখতে কমিশনারই সাধারণ মানুষের বেশে হাজির থানায়, অভিযোগ নিতে অস্বীকার পুলিশের

আগে এমনটা হত যে প্রশাসনিক কাজ খতিয়ে দেখতে প্রশাসকরাই নানান ছদ্মবেশে প্রশাসনিক কর্তাদের মাঝে হাজির হতেন। সব কাজকর্ম ঠিকঠাক চলছে কী না, তা পরীক্ষা করতে তারা সকলের অলক্ষ্যে হাজির হতেন। কিন্তু এখন আর সেসব হয় না। এখন নিজের ডিউটির বাইরে কেউ একচুলও কাজ করতে চান না।

কিন্তু হয়ত এখনও এমন মানুষ সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যাননি। এমন নিদর্শনের সাক্ষী থাকল পুনে। সেখানকার পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ প্রকাশ পুলিশের কাজ খতিয়ে দেখার জন্য যা করলেন, তা সত্যিই নজিরবিহীন। কাউকে কিছু না জানিয়ে সাধারণ মানুষের বেশে হাজির হলেন একাধিক থানায়। পরীক্ষা করে দেখলেন সাধারণ মানুষ ঠিকঠাক পরিষেবা পাচ্ছেন কী না, বা সাধারণ মানুষ কোনও অভিযোগ নিয়ে গেলে থানার পুলিশ কেমন আচরণ করেন তাদের সঙ্গে।

আরও পড়ুন- অসাধ্য সাধন ভুটানের! সঠিক টিকাকরণের ফলে গত পাঁচ মাসে সেদেশে করোনায় মৃত্যু মাত্র ১ জনের

কৃষ্ণ প্রকাশ একজন পাঠানের পোশাক পরে, মুখে নকল দাড়ি-গোঁফ লাগিয়ে একের পর এক থানায় হাজির হয়েছিলেন। সঙ্গে ছিলেন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার অফ পুলিশ প্রেরণা খাটে। তাঁকে নিজের স্ত্রী হিসেবে পুলিশের কাছে পরিচয় দিয়েছিলেন কমিশনার। তাঁরা দুজনে একের পর এক থানায় হাজির হন। সেখানে নিজেদের অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁরা দেখতে গিয়েছিলেন, সাধারণ মানুষ থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার কেমন আচরণ করেন।

প্রতিটি থানায় তাঁরা আলাদা আলাদা অভিযোগ দায়ের করেন। যেমন, ওয়াকার পুলিশ স্টেশনে গিয়ে তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর স্ত্রীর গলার সোনার চেন ছিনতাই হয়ে গিয়েছে। এরপর হিঞ্জেওয়াদি থানায় তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর স্ত্রীকে কিছু সমাজবিরোধী রাস্তায় উত্ত্যক্ত করছিল। এমনকি, তারা রাস্তার মাঝখানে শব্দবাজি ফাটাচ্ছিল বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এই দুটি পুলিশ স্টেশনের পুলিসকর্মীরা তাঁদের অভিযোগ শুনে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হন।সেখানকার পুলিশ স্টেশনে কর্তব্যরত অফিসারদের তৎপরতা দেখে সন্তুষ্ট হন পুলিশ কমিশনার। তবে সমস্যা তৈরি হয় অন্য একটি থানায়।

এরপর, পিমরি চিঞ্চোয়ার থানায় গিয়ে কমিশনার অভিযোগ করেন, কোভিড আক্রান্ত রোগী নিয়ে যাওয়ার জন্য একজন অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার তাঁদের কাছ থেকে অনেক টাকা দাবী করছে। কিন্তু ওই থানার কর্তব্যরত অফিসার তাঁর অভিযোগ দায়ের করা তো দূর, তাদের অভিযোগে সাড়াও দেন নি।

পাল্টা ওই থানার পুলিশকর্মীরা তাঁকে বলেন, স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে সবার আগে অভিযোগ জানাতে। এই ব্যাপারে থানা থেকে কোনও সহায়তা করবে না বলে জানানো হয়। এরপরই ঘটে আসল ঘটনা। নিজের আসল পরিচয় দেন ওই পুলিশ কমিশনার। ইতিমধ্যেই ওই থানার কর্তব্যরত পুলিশ অফিসারের কাছে জবাবদিহি চেয়ে পাঠিয়েছে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ। কেন অভিযোগ নেওয়া হলো না, এর সঠিক ব্যাখ্যা দিতে হবে ওই থানার পুলিশ কমিশনারকে।

Related Articles

Back to top button