নকল নোট তো দেখেছেন। নকল ব্যাঙ্ক দেখেছেন কি? ভুয়ো এসবিআই শাখা চালানোর অপরাধে গ্রেফতার খোদ ব্যাঙ্ক কর্মীর ছেলে!
জাল নোটের অপরাধ নতুন কিছু নয়। অনেক জায়গাতেই শোনা যায়। কিন্তু, তা বলে গোটা পুরোপুরি একটা নকল ব্যাঙ্কের শাখা চালানো – এমনটা এর আগে কখনও দেখা যায়নি। এমনই ঘটনা ঘটেছে তামিলনাড়ুতে। শনিবার ভারতের বৃহত্তম ব্যাঙ্ক স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার একটি নকল শাখা চালানোর অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন তিনজন। তাঁদের মধ্যে একজন এক প্রাক্তন এসবিআই কর্মীর ছেলে।
পুলিশ জানিয়েছে, সম্প্রতি তামিলনাড়ুর কুদ্দলোর জেলার পানরুটি শহরে একটি নকল এসবিআই শাখা চলছে বলে খবর পেয়েছিল তাঁরা। তদন্তে বিষয়টি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পরই শনিবার ওই নকল ব্যাঙ্কে অভিযান চালানো হয়। বর্তমানে ওই নকল ব্যাঙ্কটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে গ্রেফতার হওয়া ওই এসবিআই ব্যাঙ্ক কর্মীর ছেলে ব্যাঙ্কের বিভিন্ন কাজকর্মে দারুণ দক্ষ। তাই গত তিনমাস ধরে এই বড় মাপের জালিয়াতি কেউ ধরতে পারেনি। তবে পুলিশের দাবি, এখনও পর্যন্ত কোনও গ্রাহক ওই নকল এসবিআই-এর শাখায় অর্থ হারানোর অভিযোগ করেননি।
জানা গিয়েছে পানরুটি শহরে আরও একটি এসবিআই-এর শাখা রয়েছে। সেখানকার কর্তাদেরেই প্রথম এক গ্রাহক ফোন করে এসবিআই-এর ওই নকল সাখাটি সম্পর্কে অবহিত করেছিলেন। এরপরই এসবিআই-এর পক্ষ থেকে স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। এই ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া তিনজন হল কমল বাবু (১৯), এ কুমার (৪২) এবং এম মানিকম (৫২)। ১৯ বছরের কমল বাবু-র বাবা এসবিআই-এরই কর্মচারী ছিলেন। তাঁর মা-ও অন্য এক ব্যাঙ্কের কর্মী ছিলেন, মাত্র ২ বছর আগে অবসর নিয়েছেন।
পানরুটির আসল এসবিআই শাখার আধিকারিকরা ওই নকল শাখা ঘুরে জানিয়েছেন, এসবিআই-এর আর পাঁচটা শাখায় যে পরিকাঠামো থাকে, ওই নকল শাখায় তার সবই রয়েছে। কমল বাবু নকল ব্যাঙ্কের জন্য লকার, প্রযুক্তিগত হার্ডওয়্যার এবং প্রয়োজনীয় সব নথিপত্র সংগ্রহ করেছিল। কমল বাবু জানিয়েছে, তার বাবার মৃত্যুর পর বাবার চাকরিটা পাওয়ার জন্য সে আবেদন করেছিল, কিন্তু লাল ফিতের জটে তা এখনও হাতে পায়নি সে। অল্প বয়সে বাবার অফিসে ঘুরতে গিয়ে এসবিআই-এর বিভিন্ন দিক সম্পর্কে সে জেনেছিল। তার থেকেই এত নিখুঁতভাবে নকল ব্যাঙ্কের শাখা সাজিয়েছিল সে। আশ্চর্যের বিষয় হল ব্যাঙ্কের শাখাটি নকল হলেও, সেখানে কিন্তু একজনও গ্রাহকের কোনও ক্ষতি হয়নি।