৫ হাজার থেকে ৪৩ হাজার কোটির যাত্রাপথের অবসান, প্রয়াত শেয়ার বাজারের ‘দ্য বিগ বুল’ রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা

ভারতীয় শেয়ার মার্কেটের ‘দ্য বিগ বুল’ নামে পরিচিত ছিলেন তিনি। তাঁর শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ কখনই ভুল হত না। সেই রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালার যাত্রাপথ সমাপ্ত হল আজ, রবিবার সকাল ৬টা ৪৫ মিনিট নাগাদ। ৬২ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন সেই ধনকুবের। মুম্বইয়ের ব্রিচ অ্যান্ড ক্যান্ডি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। জানা যাচ্ছে, তাঁর একাধিক শারীরিক সমস্যা ছিল।
Billionaire veteran investor and Akasa Air founder Rakesh Jhunjhunwala passes away at the age of 62 in Mumbai pic.twitter.com/36QcRfHXsa
— ANI (@ANI) August 14, 2022
কিছুদিন আগেই তিনি একটি জুতো সংস্থার শেয়ার কিনেছিলেন তিনি। সেটিও কয়েক দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ দরে পৌঁছে যায়। এক দিনে তিনি লাভ করেন ২২১ কোটি টাকা। আবার তাঁরই পৃষ্ঠপোষকতায় গত সপ্তাহেই আকাশে ওড়ে আকাশা এয়ারলাইন্সের বিমান।
রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালার মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। টুইটে রাকেশকে ‘জীবননিষ্ঠ, সুরসিক ও অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। ৬২ বছরের রাকেশের উত্থান সত্যিই যেন এক রূপকথা। তাঁর এই গল্প আগামী দিনে অনেকের কাছেই অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের।
Rakesh Jhunjhunwala was indomitable. Full of life, witty and insightful, he leaves behind an indelible contribution to the financial world. He was also very passionate about India’s progress. His passing away is saddening. My condolences to his family and admirers. Om Shanti. pic.twitter.com/DR2uIiiUb7
— Narendra Modi (@narendramodi) August 14, 2022
১৯৬০ সালের ৫ জুলাই হায়দরাবাদের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম রাকেশের। পরে তাঁর বেড়ে ওঠা মুম্বইয়ে। সিডেনহ্যাম কলেজ অব কমার্স অ্যান্ড ইকনমিক্স থেকে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা সম্পূর্ণ করার পরে রাকেশের পরবর্তী গন্তব্য ছিল ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব ইন্ডিয়া। কলেজে পড়ার সময়েই রাকেশের আগ্রহ ছিল স্টক মার্কেট নিয়ে।
বাবার কাছ থেকেই এই ধারা পেয়েছিলেন তিনি। রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালার বাবা ছিলেন স্যকর বিভাগের অধিকর্তা। স্টক মার্কেট নিয়ে বেশ আগ্রহী ছিলেন তিনি। শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের জেরেই কিংবদন্তি হয়ে ওঠেন রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা।
১৯৮৫ সালে স্টক মার্কেটে মাত্র ৫০০০ টাকা বিনিয়োগ করে শুরু করেছিলেন নিজের যাত্রা। এরপর সেই অঙ্ক বেড়ে দাঁড়ায় ৪৩ হাজার কোটি টাকায়। শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে লাভের পরিমাণের জন্য তাঁকে ‘ওয়ারেন বাফে’ বলা হত। অতিমারির সময় যখন নানান সংস্থা ক্ষতির জেরে ধুঁকছে, সেই সময়ও বৃদ্ধি পায় রাকেশের সম্পত্তি।
তাঁর জীবনের আরেক গুরুত্বপূর্ণ বছর ২০০৩ সাল। টাইটান কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ার থেকে বিপুল লাভ করেছিলেন তিনি। ২০০৬ সালে লুপিন সংস্থার শেয়ার থেকেও বিপুল লাভ করেন রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালা। রাকেশ বিশ্বাস করতেন যে জীবনে ঝুঁকি নেওয়াটাও একটা পদক্ষেপ। তবে তা ভেবেচিন্তেই করা উচিত। সেই ব্যক্তিত্বের যাত্রাপথ থেমে গেল ৬২ বছর বয়সেই।