পাশবিক! দুই মেয়ের একজনকে ডাম্বেল দিয়ে, অন্যজনকে ত্রিশূল দিয়ে হত্যা করল অঙ্কে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত মা, প্রিন্সিপাল বাবা
একমাত্র শিক্ষাই নাকি কুসংস্কারকে দূর করতে পারে। শিক্ষার আলো সরিয়ে দেয় মনের সমস্ত অন্ধকার। কিন্তু এই কথাকেই এবার মিথ্যে প্রমাণ করলো অন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তুরের একটি নারকীয় ঘটনা। নিজেদের দুই মেয়েকে নিমর্মভাবে হত্যা করল তথাকথিত ‘উচ্চশিক্ষিত’ মনে সম্পূর্ণভাবে কুসংস্কারচ্ছন্ন বাবা-মা। অন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তুরের এই ঘটনার জেরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। রবিবার রাতে ঘটে এই জোড়া হত্যার ঘটনা।
ঘটনাটি ঘটেছে চিত্তুরের মদনপল্লে ব্লকের আঁখিশেত্তিপল্লে গ্রামের শিবনগর কলোনিতে। ইতিমধ্যেই হত্যাকারী বাবা-মাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও এই ঘটনার নেপথ্যের কারণ কি, তা জানার চেষ্টা চলছে।
কিন্তু লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে পুরো পরিবারই উচ্চশিক্ষিত। সরকারি কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল হচ্ছে অভিযুক্ত পিতা মাল্লারু পুরুষোত্তম নাইডু। ওই দুই মেয়ের মা পদ্মজাও, অঙ্কে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত ও একটি বেসরকারি কলেজের অধ্যাপক।
বাবা, মায়ের হাতে খুন হওয়া বড় মেয়েটি ইন্ডিয়ান ফরেস্ট সার্ভিস অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২৭ বছর বয়সী ওই তরুণী লকডাউনের সময় বাড়ি চলে আসেন ও আইএএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বছর তেইশের ছোটো মেয়ে এমবিএ করার পর এআর রেহমান অ্যাকাডেমিতে গান শিখছিল। পুলিশ জানিয়েছে যে কিছুদিন আগেই শিবনগরের বাড়িতে আসে পরিবারটি। আঞ্চলিক সূত্রে খবর পুরো পরিবারই অত্যন্ত ধর্মীয় ছিল ও লকডাউনে নিয়মতি ভাবে বাড়িতে পুজো পাট চলত।
Related Posts
কিন্তু গত তিনদিন ধরে লাগাতার পুজো চলছিল। এরপর রবিবার রাতে, পুজোর শেষে দম্পতি প্রথমে বড় মেয়েকে হত্যা করে শ্বাষরোধ করে। তারপর ডাম্বেল দিয়ে তার মাথা ভেঙে চৌচির করে দেয়। এরপর ছোটো মেয়েকে তার ঘরে নিয়ে গিয়ে ত্রিশূল দিয়ে হত্যা করে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তারপর নিজের এক সহকর্মীকে ফোন করে ঘটনাটির কথা জানায় অভিযুক্ত। সেই ভদ্রলোকই পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ জানিয়েছে দম্পত্তি সম্পূর্ণ তন্দ্রাচ্ছন্ন ও তাদের কোনও মানসিক সমস্যা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ এই ঘটনায় তাদের মেয়েরা যে মারা গেছে তা কিছুতেই বিশ্বাস করতে চাইছেন ওই দম্পতি।
পুলিশকে তাঁরা জানায় যে মেয়েরা কিছুবাদেই জেগে উঠবে। উচ্চশিক্ষিত মানুষ কীভাবে এরকম কুসংস্কাচ্ছন্ন হয়ে গেল, সেটাই ভেবে উঠতে পারছে না পুলিশ। আপাতত তদন্ত চলছে। পুরো বাড়িতে কড়া পুলিশি পাহারা বসেছে যাতে সম্বিত ফিরলে দম্পতি আত্মহত্যা না করে বসে। এই মর্মান্তিক ঘটনার সম্পূর্ণ তদন্ত করছে পুলিশ।