‘এই বিষয় আদালতে আসা খুবই দুঃখজনক’, স্কুল ফি নিয়ে অভিভাবকদের আর্জি খারিজ শীর্ষ আদালতের

লকডাউনের জেরে অনেক মানুষই বর্তমানে কাজ হারিয়েছেন কিংবা অনেকের বেতন আগের থেকে কিছুটা হলেও কমেছে। এমত অবস্থায় কিভাবে অভিভাবকরা নিজেদের সন্তানের স্কুল ফি জমা দেবে? তাই লকডাউন তুলে নেওয়ার আগে পর্যন্ত স্কুলের ফি পিছিয়ে দেওয়া বা স্থগিতাদেশের আর্জি জানিয়েছিলেন আটটি রাজ্যের অভিভাবকরা। এবার সেই আবেদন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি এইরকম একটি বিষয়ে আদালত পর্যন্ত এসে পৌঁছানোর দুঃখপ্রকাশ করেছেন শীর্ষ আদালত।
আবেদনকারীদের সংশ্লিষ্ট রাজ্যের হাইকোর্টে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ। তাদের বক্তব্য, ‘এরকম বিষয় আদালতে পৌঁছানো ভীষণই অদ্ভুত, এই সমস্যা প্রশাসনিকভাবে মোকাবিলা করা উচিত।’ এর পাশাপাশি পরিযায়ী শ্রমিক, করোনার পরীক্ষার খরচের মতো প্রশাসনিক বিষয়গুলিও আদালতে আসায় আক্ষেপ প্রকাশ করতে হয়। বেঞ্চের তরফে বলা হয়, ‘এই মুহূর্তে কী করা উচিত তা আমাদের জানা নেই। এরকম ক্ষেত্রে ভিন্ন রাজ্যে ভিন্ন সমস্যা হতে পারে। আবেদনকারীরা আদালতের দ্বারস্থ হন। কিন্তু যখন আমরা নোটিশ জারি করতে চাই নি, তখন তাঁরা হতাশ হয়ে পড়েন।’
আবেদনকারীদের আইনজীবী মায়াঙ্ক শিরসাগর আদালতে জানান, স্কুলের ফি জমার ক্ষেত্রে আলাদা কোনো ব্যবস্থা নেই। বরং দেশের সাতটি হাইকোর্ট একই বিষয় ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে। ডিভিশন বেঞ্চের তরফে বলা হয়, ‘এটা খুবই দুঃখের বিষয়। যৌক্তিকতার ভিত্তিতে আপনাদের আবেদন খারিজ করতে চাই। কিন্তু আপনারা আপনাদের নিজেদের রাজ্যের হাইকোর্টে যাচ্ছেন না কেন? এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে এমনকি এক জেলা থেকে অন্য জেলার ক্ষেত্রে পরিস্থিতি তো ভিন্ন হতেই পারে।’
গত এপ্রিল-জুন পর্যন্ত বা স্কুল পুনর্বার না চালু হওয়া পর্যন্ত ফি দেওয়ার ক্ষেত্রে স্থগিতাদেশ চেয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন দিল্লি, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, পঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, ওড়িশা এবং উত্তরাখণ্ডের ১০ জন অভিভাবক। অধিকাংশ আবেদনকারীর অভিযোগ, লকডাউনের সময় তাঁরা চরম আর্থিক কষ্টে পড়েছেন এবং ফি জমা দিতে হলে তাঁরা নিজেদের ছেলেমেয়েদের স্কুল ছাড়াতে বাধ্য হবেন।
একইসঙ্গে লকডাউন কার্যকর হওয়া পর্যন্ত অনলাইন ক্লাস চলছে। কিন্তু তাতেও সামাজিক এবং আর্থিকভাবে অনগ্রসর পড়ুয়াদের জন্য পর্যাপ্ত পরিকাঠামো নেই। সে ক্ষেত্রে তারও আর্জি জানান তাঁরা। ‘ন্যাশনাল স্যাম্পেল সার্ভে’-র ২০১৭-১৮ সালের একটি পরিসংখ্যান তুলে আবেদনকারীরা বলেন, দেশের মাত্র ৪.৪ শতাংশ গ্রামে এবং শহরাঞ্চলের মাত্র ২৩ শতাংশ বাড়িতে কম্পিউটার রয়েছে। এছাড়া, শহরাঞ্চলে ৪২ শতাংশ বাড়িতে এবং গ্রামের ক্ষেত্রে ১৪.৯ শতাংশ বাড়িতে ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে।