শুধুমাত্র পাখিদের জন্য জমিতে ফসল ফলান এই কৃষক

সবাই বলে বর্তমান পৃথিবী খারাপ মানুষে ভরে গেছে। ভালোমানুষের আর কোনো অস্তিত্বই নেই। কিন্তু এ কথাটা পুরোপুরি সত্যি না এমন প্রমাণও অনেক মিলেছে। এ রকমই একটি উদাহরণ মিলল কোয়েম্বাটুর এর ঠোন্ডামুথুর গ্রামে। ৬২ বছর বয়সী মুথু মুরুগান নামের এক চাষী তার ৪ একর জমির দেড় একর জমি পাখিদের খাবার উদ্দেশ্যে দান করেছেন। সেখানে অনেক সময় ক্ষেতের ধান বা অন্যান্য খাদ্যশস্য পাখিরা খেয়ে নিলে চাষিরা খুব বিরক্ত বোধ করে সেখানে উক্ত ঘটনাটি খুবই বিরল।
এই দেড় একর জমিতে মুথু মুরুগান পাখিদের জন্য চাষ করছেন বাজরা। তাঁর মতে, বনাঞ্চলে কীটনাশকের ব্যবহার নেই তাই সেই স্থানে পাখিরা দিব্যি তাদের বাসস্থান গড়ে তুলতে পেরেছে। তাই আমরাই বা কেন কীটনাশক ব্যবহার করব? কীটনাশক দিয়ে ফসলের পোকা মারতে গিয়ে অজান্তে সেই খাদ্যকে পাখিরা মারা যাচ্ছে। মুনিয়া, ময়ূর এখানে প্রায়ই আসে। মুথু মুরুগান জানান, “কয়েক মাস আগে আমি লক্ষ্য করি অনেক চাষী পাখিদের উদ্দেশ্যে পাথর ছুঁড়ছেন। সেই থেকে আমি ঠিক করি পাখিদের জন্য জায়গা তৈরি করে সেখানে বাজরা চাষ করার। ৩০০ টাকা এর জন্য আমি বিনিয়োগও করি”।
এই চাষির এক বন্ধু বরুন আলাগার, যিনি পেশায় একজন ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার তিনি তাঁর বন্ধুর এই জায়গা দেখে অবাক হয়ে যান। মুরুগান শুধু যে পাখিদের খাবার জন্যই ব্যবস্থা করেছেন তা নয়, তিনি নানা ধরনের ক্যাকটাসও চাষ করেন। তার মনে হয়, এই গাছগুলো চাষ করলে এই গাছ শুকিয়ে যাওয়ার পরে যে বর্জ্য পদার্থগুলো জন্মায় তা জমিতে সার হিসাবে ভাল কাজে লাগে। শুধু তাই নয়, এই গাছ থাকার জন্য পাখিরাও তাদের বসতি স্থাপন করতে পারে। তার এই উদ্দেশ্য সত্যিই প্রশংসনীয়। তার জন্যই আজও এই হিংসা কবলিত পৃথিবীতে মানুষ বেঁচে থাকার রসদ খুঁজে পায়। তার মতো মানুষেরা পৃথিবীতে বড়ই দুর্লভ।
প্রতিবেদনটি লিখেছেন – অন্তরা ঘোষ