কৃষি আইন প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া এবার আরও একধাপ এগোল, ২৪শে নভেম্বরই মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদন মেলার সম্ভাবনা
গত ১৯শে নভেম্বর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় আচমকাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেন যে তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরও শান্ত হন নি কৃষকরা। তাদের দাবী ছিল সংসদে এই আইন বাতিলের প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত তারা পিছু হটবেন না।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, এবার এই কৃষি আইন বাতিলের প্রক্রিয়া আরও একধাপ এগোল। চলতি সপ্তাহেই সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের আগেই কৃষি আইন প্রত্যাহারের বিষয়টি মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আগামী বুধবার হতে চলেছে মন্ত্রিসভার বৈঠক। এই বৈঠকেই কৃষি আইন প্রত্যাহারের বিষয়টি আরও এক ধাপ এগোনোর সম্ভাবনা রয়েছে।
গুরু নানকের জন্ম দিনের দিন জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে সমগ্র দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেছিলেন, “প্রত্যেক দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাইছি। আমরা কৃষকদের উন্নতির কথা ভেবেই এই আইন নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু আমরা হয়ত কৃষকদের বোঝাতে পারিনি। আমাদেরই হয়ত কোনও গাফিলতি ছিল যে আমরা কৃষকদের এই আইন তিনটির যথার্থতা বোঝা অক্ষম হয়েছি”।
প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিল কৃষকদের সংগঠন সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা। কিন্তু কৃষকদের একটি অংশ তাদের আরও কিছু দাবী নিয়েও সওয়াল করেছিল। তাদের তরফে প্রকাশিত করা হয় এক প্রেস বিবৃতি।
এই বিবৃতিতে বলা হয়, “শুধুমাত্র এই তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারই নয়, কৃষকদের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দাবী এখনও বকেয়া রয়েছে। কৃষকরা ফসল বিক্রির ক্ষেত্রে সরকারে কাছে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য দাবি করেছিল সেই নিয়েও দ্রুত সিদ্ধান্ত নিক সরকার। আমরা বিদ্যুৎ সংশোধনী বিল প্রত্যাহারেরও দাবী জানিয়েছিলাম। সেই বিষয়ে সরকারে পদক্ষেপ প্রয়োজন”। কৃষকদের প্রধান দাবী পূরণের কথা ঘোষণা করলেও, বাকি দাবীগুলি নিয়ে এখনও সরকারি তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে উৎপাদিত কৃষি পণ্যে ব্যবসায়িক দিক, অত্যাবশ্যক পণ্য, কৃষিজাত পণ্য মূল্য সংক্রান্ত তিনটি আইন পাশ করা হয় কেন্দ্র সরকারের তরফে। সরকারের বক্তব্য ছিল যে এই আইনের ফলে কৃষকরাই উপকৃত হবেন। কিন্তু এই আইন নিয়ে বিক্ষোভ দেখান গোটা দেশের কৃষকরা। তাদের দাবী ছিল, এই আইন পাশ হলে ছোটো ও প্রান্তিক কৃষকরা দুর্ভোগে পড়বেন।
এই কৃষি আইন প্রত্যাহারের জন্য দেশজুড়ে শুরু হয় প্রতিবাদ। কৃষকরা দিল্লি অভিযান করে আন্দোলন করেন। রেল রোকো, ভারত বনধ, এমন নানান বিক্ষোভ দেখা যায়। এই নিয়ে বেশ কয়েকবার সরকার ও কৃষকদের মধ্যে বৈঠকও বসে। কিন্তু কোনও সমাধান সূত্র মেলেনি। এই কারণে শেষ পর্যন্ত আইন প্রত্যাহার করে নেয় মোদী সরকার।