পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে রকেট! কে পাঠাল? উদঘাটন হল রহস্য!

আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা-র শক্তিশালী টেলিস্কোপে হঠাৎই মহাকাশ থেকে ধেয়ে আসা কোনও এক বস্তু দেখে প্রাথমিকভাবে চমকে গিয়েছিলেন মহাকাশ গবেষকরা। ভেবেছিলেন হয়তো কোনও গ্রহাণু ধেয়ে আসছে পৃথিবীর দিকে। কিন্তু পরে যা দেখা গেল, তাতে তাঁদের বিস্ময় আরও বেড়ে গেল। টেলিস্কোপে ধরা পড়ল পৃথিবীর দিকে মহাকাশ থেকে ধেয়ে আসছে একটি রকেট। আর তাতেই হতবাক সকলেই। পৃথিবীর বাইরে থেকে পৃথিবীতে রকেট কে পাঠাতে পারে? কিন্তু তারপর আসল সত্যিটা সামনে আসতে জানা গেল সেই রকেটটা আর কোথাও থেকে পাঠানো নয়, বরং পৃথিবী থেকেই পাঠানো রকেট। তবে সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হল রকেটটা পৃথিবী থেকে উৎক্ষেপণ হয়েছিল আজ থেকে ৫৪ বছর আগে, ১৯৬৬ সালে।
তাহলে এই ৫৪ বছর ধরে রকেটটা কোথায় ছিল?
জানা গেছে ১৯৬৬ সালে সফল উৎক্ষেপণ হয়েছিল সার্ভেয়ার ২ নামে এই রকেটটির। কিন্তু চাঁদের বুকে অবতরণের আগেই ভেঙে পড়েছিল বলে মনে করা হয়। কিন্তু আসলে সেটি ভেঙে পড়েনি। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছিল পৃথিবীর সঙ্গে। তারপর সেটি চাঁদের কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করতে থাকে। তারপর সূর্যকেও প্রদক্ষিণ করতে শুরু করে। আর অবশেষে এই ৫৪ বছর পর আবার সেটি পৃথিবীর টানে পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসছে।
তবে পৃথিবীর দিকে এগিয়ে এলেও ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা নেই। এমনটাই জানিয়েছেন এই রকেটটির অস্তিত্ব যিনি সন্ধান পেয়েছিলেন সেই মহাকাশবিদ পল চোডাস। তবে এটির অস্তিত্ব সবার প্রথম চোখে পড়ে হাওয়াইয়ের এক মহাকাশপ্রেমির টেলিস্কোপে। তারপরেই নাসা একে নিয়ে গবেষণা ও পর্যবেক্ষণ করতে শুরু করে।
পৃথিবীর যত কাছে আসবে তত এর সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানাচ্ছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। বিশেষ করে তার কক্ষপথে সূর্যের আলোর তেজস্ক্রিয়তা ও তাপ কতটা প্রভাব ফেলছে তা বোঝা যাবে। স্বাভাবিক ভাবেই এই রকেটের চলন সাধারণ কোনও গ্রহাণুর থেকে অনেক আলাদা হবে। কারণ এটির শরীর ফাঁপা ও বিরাট ক্যানের মতো। কিন্তু গ্রহাণু যেহেতু নিরেট পাথর, তাই তার চলন অনেকটাই আলাদা।
মনে করা হচ্ছে আগামী নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে পৃথিবীর কক্ষপথে প্রবেশ করবে রকেটটি। তারপর মাস পাঁচেক পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে মার্চ মাসে আবার পাড়ি জমাবে অচেনা মহাকাশে, সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার উদ্দেশ্যে।
আপাতত কিছুদিনের অতিথি হয়েই পৃথিবীতে আসছে পৃথিবী থেকেই পাঠানো সার্ভেয়ার ২।