সামনে আসছে একের পর এক সাংসদ-বিধায়কের নানান কেচ্ছার কাহিনী, চরম বিড়ম্বনায় তৃণমূল
একুশের নির্বাচনে তারকা তাস খেলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর এই তারকা-প্রীতি নতুন কিছু নয়। নানান তারকাদের রাজনীতির ময়দানে আসা তাঁর হাত ধরেই। বিধানসভা হোক না লোকসভা, নানান তারকা প্রার্থীদের নিয়ে বারবার চমক দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এমনকি, একুশের জুলাইয়ের মঞ্চেও জ্বলজ্বল করেছে গ্ল্যামার দুনিয়া।
আরও পড়ুন- রাজ্যে পুলিশের OBC বিভাগে নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক, নিযুক্ত ৩৭ জনের মধ্যে ৩৫ জনই মুসলিম সম্প্রদায়ের!
বড় পর্দা হোক বা টেলিভিশন, নানান তারকাদের বারবার দেখা গিয়েছে মমতার সভামঞ্চ উজ্জ্বল করতে। সেই তারকারা আবার জয় হাসিলও করিয়েছেন মমতাকে। এবার তৃণমূল সর্বভারতীয় স্তরে যেতে চাইছে, লক্ষ্য ২০২৪-এর লোকসভা। এই কারণে সাংগঠনিক কাজেও তারকাদেরই কাজে লাগাতে চাইছেন মমতা। কিন্তু বিগত কিছুদিন দ্গ্রে যেভাবে একের পর এক সাংসদ-বিধায়কদের কেচ্ছা সামনে এসেছে, তাতে বেশ মুশকিলে পড়েছে ঘাসফুল শিবির।
২০১৯ সালে অভিনেত্রী নুসরত জাহান ও মিমি চক্রবর্তীকে লোকসভা নির্বাচনের প্রার্থী করেন মমতা। দুই টলিকন্যাই জয় এনে দেয় তাঁকে। বসিরহাট থেকে বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসুকে বিপুল ভোটে হারিয়ে জয়ী হন নুসরত জাহান। এরপর সাংসদ হন তিনি। রাজনীতিতে তাঁকে বিশেষ দেখা না গেলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় কিন্তু বিজেপিকে আক্রমণ শানাতে সিদ্ধহস্তা তিনি।
এই নুসরত নিয়েই বিপাকে পড়েছে তাঁর দল। আসলে, কিছুদিন আগেই নুসরতের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর সামনে আসে। স্বামী নিখিলের সঙ্গে তাঁর ছাড়াছাড়ি হয়েছে বেশ কিছুমাস আগেই। নিখিল জানান এ সন্তান তাঁর নয়। এরপর থেকেই জল্পনা শুরু হয় এই সন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়ে। এরই মাঝে নুসরত বিস্ফোরক মন্তব্য করে জানান যে নিখিলের সঙ্গে নাকি তাঁর বিয়েই হয়নি। তারা সহবাস করেছেন মাত্র।
এরপর থেকেই এই নিয়ে রাজনৈতিক স্তরেও নানান গুঞ্জন শুরু হয়। যদিও তৃণমূলের তরফে বলা হয় যে এটা অভিনেত্রীর ব্যক্তিগত বিষয়। কিন্তু বিজেপির তরফে একটি ভিডিও ভাইরাল করা হয় যাতে দেখা যাচ্ছে নুসরত শাঁখা, সিঁদুর পরে সংসদে শপথ নিচ্ছেন। তাঁকে বলতে শোনা যায় “আমি নুসরত জাহান রুহি জৈন, স্বামী নিখিল জৈন”। এরপরই প্রশ্ন তোলা হয়, তাহলে নুসরত সংসদে মিথ্যে কেন বলছেন? এর কোনও সঠিক উত্তর নেই তৃণমূলের কাছে।
আরও পড়ুন- ‘এটা কাঞ্চন-সুলভ আচরণ নয়’, কাঞ্চন-পিঙ্কির দাম্পত্য বিবাদ নিয়ে সরব বিরোধী দলনেতা রুদ্রনীল ঘোষ
আবার অন্যদিকে নতুন বিতর্ক দানা বেঁধেছে উত্তরপাড়ার বিধায়ক অভিনেতা কাঞ্চন মল্লিককে নিয়ে। কিছুদিন ধরেই টেলি অভিনেত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজের সঙ্গে তাঁর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের কথা সামনে আসে। এরপর গত শনিবার কাঞ্চনের স্ত্রী পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায় আলিপুর থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন।
পিঙ্কির অভিযোগ, কাঞ্চন তাঁর ছেলের কোনও খোঁজ নেন না। এমনকি শ্রীময়ী তাঁকে হুমকি দিয়েছেন বলেও জানান তিনি। কাঞ্চনও তাঁকে মদ্যপ অবস্থায় হেনস্থা করেছেন বলে অভিযোগ আনেন পিঙ্কি। এরপর পাল্টা স্ত্রীয়ের বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের করেন কাঞ্চন। এভাবেই কাঞ্চনকে নিয়েও বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে দল।
নুসরত হোক বা কাঞ্চন, কাউকে নিয়েই কোনও মন্তব্য করতে রাজী হয়নি তৃণমূল শিবির। এসমস্ত তাদের ব্যক্তিগত বিষয় বলে যতই ঘাসফুল শিবির নিজের দায় ঝেড়ে ফেলতে চাক না কেন, জনগণের প্রশ্ন থেকে তো পালান বেশ মুশকিল।