নিন্দনীয়! চাকরির দেওয়ার নাম করে যৌ’ন হেনস্থা, সাগরদিঘির কংগ্রেস প্রার্থীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের মহিলার
সামনেই উপনির্বাচন সাগরদিঘিতে (Sargardighi)। আর এর আগেই ওই কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থীর (Congress candidate) বিরুদ্ধে উঠল বিস্ফোরক অভিযোগ। সাগরদিঘি উপনির্বাচনের জন্য কংগ্রেসের তরফে প্রার্থী করা হয়েছে বায়রন বিশ্বাসকে (Byron Biswas)। ওই প্রার্থীর বিরুদ্ধেই হাওড়ার বাসিন্দা এক মহিলাকে যৌ’ন হেনস্থা (physically harassment) করার অভিযোগ উঠল। হাওড়ার সাঁকরাইল থানায় এই নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন ওই মহিলা।
অভিযোগকারিণী মহিলার বক্তব্য, গত কয়েক বছর ধরে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস। চাকরি দেওয়ার নাম করে তাঁকে নানাভাবে হয়রান করেছেন বলেও জানান ওই মহিলা। তাঁর আরও দাবী, ওই কংগ্রেস প্রার্থী তাঁকে নানান মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে বিরক্ত করেছেন। এমনকি এই বিষয়টি কাউকে জানালে এর পরিণতি ভয়ঙ্কর হবে বলে হুমকিও দিয়েছেন বলে পুলিশে অভিযোগ করেছেন ওই মহিলা।
মহিলার কথায়, “আমি কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাসকে বলেছিলাম আমাকে বিরক্ত করবেন না। কিন্তু উনি সেটা না শুনে এবং এবছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে আমাকে বিভিন্ন মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে বিরক্ত করছেন। এবং আমাকে অশালীন ভাষায় হুমকি দিয়েছেন। একই সঙ্গে আমায় বলেছেন আমি এই বিষয়টি কাউকে জানালে তিনি কড়া পদক্ষেপ নেবেন”।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যেয় একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়। যদিও এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি খবর ২৪x৭। ওই ভিডিওতে ওই মহিলাকে বলতে শোনা গিয়েছে যে কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস তাঁকে চাকরি দেওয়ার নামে যৌ’ন হেনস্থা করেছেন। স্বামী-সন্তান নিয়ে তিনি শ্বশুরবাড়ি থাকেন বলে জানা গিয়েছে। মহিলা জানান যে অত্যন্ত নিরুপায় আর ভীত হয়ে তিনি পুলিশকে সবটা জানিয়েছেন। পুলিশ যাতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়, এই আর্জিও জানান তিনি।
ওই অভিযোগকারিনীর কথায়, “কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস আমাকে ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা করছে। সেই জন্যই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। আমি পুলিশকে অনুরোধ করছি আমাকে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা দিতে। ওঁর কাছে হোটেলে তোলা আমাদের কিছু ছবি আছে, যেখানে উনি আমাকে জোর করে নিয়ে গিয়েছিলেন। আমি ভেবে অবাক হয়ে যাচ্ছি, এমন একজন মানুষকে কীভাবে নির্বাচনে লড়তে দেওয়া হয়। আমি সাগরদিঘির জনগণকে অনুরোধ করব, তাঁরা যেন নারী নিরাপত্তার কথা ভেবে এই কংগ্রেস প্রার্থীকে তাঁদের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত না করেন। এই নেতার নেতৃত্বে কোনও নারী নিরাপদ থাকতে পারেন না”।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে অভিযুক্ত বায়রন বিশ্বাসের দাবী তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র চলছে। তিনি বলেন, “একটা সামান্য বিধানসভার উপনির্বাচন নিয়ে শাসকদল তৃণমূল জঘন্য নোংরামি করছে। এথেকে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া ও আতঙ্কিত। ১৮ ফেব্রুয়ারি রাত দুটোয় সাগরদিঘির পাটকেলডাঙ্গার গৌরীপুরে কংগ্রেস কর্মী সাইদুর রহমানের বাড়িতে চড়াও হয়ে বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেপ্তার করে। ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই হাই কোর্টের বিচারপতি বুধবার সাইদুরের জামিন মঞ্জুর করে তৃণমূলের গালে চড় মেরেছেন। হাওড়ার সাঁকরাইল থানায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে একই দিনে একই অভিযোগ আনা হয়েছে আমার বিরুদ্ধে। শুধু সাইদুর আর বাইরন না। উপনির্বাচন যতই এগিয়ে আসবে কংগ্রেস নেতৃত্বের প্রতি শাসক দল এধরণের ভিত্তিহীন অভিযোগ আনবে। তাতে কংগ্রেসের কিছু যায় আসে না। মানুষ কংগ্রেসের পক্ষে আছে। ২৭ শে ফেব্রুয়ারি সাগরদিঘিবাসী ভোটের মাধ্যমে উপযুক্ত জবাব দেবেন”। এদিকে, বায়রন বিশ্বাসের প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের দাবী তুলেছে তৃণমূল।