মজদুর থেকে টাইপিস্ট সব স্তরে দুর্নীতি, কামারহাটি, দমদম, বরানগর-সহ ৬০-এরও বেশি পুরসভায় বেআইনি নিয়োগ, চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলল ইডি-র তদন্তে
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি দিয়ে শুরু হয়েছিল, এবার তদন্ত করতে করতে যা দেখা যাচ্ছে রাজ্যজুড়ে নিয়োগে দুর্নীতি হয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত হুগলির বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অয়ন শীলের অফিসে তল্লাশি চালিয়ে একাধিক চাঞ্চল্যকর নথি মিলেছে। প্রায় ৩৭ ঘণ্টা জেরা ও তল্লাশির পর অয়নকে গ্রেফতার করে ইডি।
অয়নকে আদালতে পেশ করে ইডি-র দাবী, শান্তনু ঘনিষ্ঠ এই প্রোমোটারের অফিস থেকে পুরসভা নিয়োগে দুর্নীতির হদিশ মিলেছে। তদন্তকারী আধিকারিকদের দাবী, রাজ্যের ৬০ পুরসভায় প্রায় ৫০০০-এর ও বেশি চাকরি বিক্রি হয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে। ইডি সূত্রে খবর, এর মধ্যে উত্তর ২৪ পরগণার মোট ২৮টি পুরসভার মধ্যে ৬ পুরসভার প্রত্যেক স্তরে নিয়োগের ক্ষেত্রে হাজার হাজার চাকরি বিক্রি হয়েছে।
ইডি আধিকারিকদের কথায়, উত্তর দমদম থেকে শুরু করে দক্ষিণ দমদম, কামারহাটি, বরানগর, হালিশহর-সহ মোট ৬০টি পুরসভার নিয়োগে বেনিয়ম হয়েছে। তদন্তকারী আধিকারিকদের অনুমান, শুধুমাত্র শিক্ষক নিয়োগে নয়, অয়ন শীলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে পুরসভার নিয়োগেও বেআইনি চক্র চালাতেন শান্তনু।
জানা গিয়েছে, পুরসভার নিয়োগে ওএমআর শিট সরবরাহের টেন্ডার পেয়েছিল অয়ন শীলের কোম্পানি এবিএস ইনফোজেন প্রাইভেট লিমিটেড। তার সল্টলেকের অফিসে নানান পুরসভার পরীক্ষার ওএমআর শিট মিলেছে। ইডি-র অনুমান, ওএমআর শিট বিকৃত করে অযোগ্য প্রার্থীদের চাকরি দেওয়া হত।
এমন দুর্নীতির প্রমাণ দেখে আদালতে ইডি আধিকারিক বলেন, “শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতির তদন্ত করছিলাম এখন দেখছি রাজ্য সরকারের সব দফতরের নিয়োগেই অনিয়ম হয়েছে”। ইডির দাবী, টাইপিস্ট থেকে শুরু করে শ্রমিক, সাফাইকর্মী, গাড়িচালক-সহ একাধিক পোস্টে নিয়োগের ক্ষেত্রে পাঁচ হাজারেরও বেশি পদে বেআইনি নিয়োগ হয়েছে। প্রায় ৫০ লক্ষেরও বেশি টাকায় চাকরি বিক্রি হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, “ব্যাঙ্কশাল আদালতে পুর নিয়োগে অনিয়মের যে কথা বলা হয়েছে, আমরা পুরসভার তালিকা নিয়ে অবশ্যই খতিয়ে দেখব”।