তিন ধাক্কার ঝড় শেষ হলে তবেই বিপদ কাটবে, কাল দুপুরের পর বাড়ি থেকে না বেরোনোর নির্দেশ মমতার
রাজ্যে কালই আছড়ে পড়তে চলেছে আমফান। আজ নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে আমফান নিয়ে সর্তক বার্তা জারি করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “কাল ২টো নাগাদ দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরে হিট করবে আমফান। তার তান্ডব চলবে মধ্যরাত অবধি। তারপর বাংলাদেশে চলে যাবে।এই ঝড়ের তিনটে অংশ। মাথা চোখ আর টেইল।প্রথমে মাথা তারপর আই শেষে টেইল হিট করবে। এই টেলেই ক্ষতির ভাগ বেশি। ওড়িশায় ফণীর সময় এটাই হয়েছিল। আয়লার থেকেও ভয়ঙ্কর হতে পারে আমফান। আমফানে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা তারপর উত্তর ২৪ পরগনা, পশ্চিম মেদিনীপুরও। কাল বেলা ১১টা-১২টার পর থেকে আর বাড়ির বাইরে বেরবেন না। আর যাঁরা ত্রাণ শিবিরে আছেন, তাঁরা ত্রাণ শিবিরেই থাকুন।পরশুদিন প্রশাসন অনুমতি দেওয়ার পর বেরবেন।”
তিনি নিজেও বুধবার দুপুর থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত নবান্নেই থাকবেন বলে জানান। নবান্নে কন্ট্রোলরুমে উপস্থিত থেকে তিনি সবদিকে নজরদারি চালাবেন।
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী আমফান জোন বিষয়ে নিজের বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, “আজকের অরেঞ্জ জোন কাল রেড জোন হয়ে যাবে। রেড, রেড প্লাস, রেড স্টার জোন। তবে এগুলো কোনোটাই করোনা জোন নয় বরং আমফান জোন। ঝড়ের তিনটি ধাক্কা। তাই প্রথম ধাক্কা সরে গেলেই কেউ বেরিয়ে পড়বেন না। কাল সারাদিন দক্ষিণবঙ্গের জেলায় জেলায় অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই দুর্যোগ না কাটা পর্যন্ত বাড়িতেই থাকুন। আর বিপজ্জনক বাড়ি থেকে দূরে থাকুন, বাড়ি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থাকলে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। সাইক্লোন শেল্টারে চলে আসুন।”
আমফানের তাণ্ডবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সাগরদ্বীপ, মৌসুনি আইল্যান্ড, নামখানা, ঘোড়ামারি, কাকদ্বীপ, গোসাবা, ফ্রেজারগঞ্জ ব্যপক ক্ষতির মুখোমুখি হবে বলে বৈঠকে আশঙ্কাপ্রকাশ করেন মু্খ্যমন্ত্রী। এই এলাকাগুলিতে জেলা ও পুলিস প্রশাসনকে আগাম সতর্কতা জারি করার নির্দেশ দেন তিনি। একইসঙ্গে টিনেজ বলেন আমফানের দাপটে উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ, বসিরহাট, সন্দেশখালি এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন, নারায়ণগড় জায়গাগুলোতে ক্ষতির সম্ভাবনা প্রবল।
আমফান মোকাবিলা করতে রাজ্যের মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে তৈরি হওয়া টাস্ক ফোর্স ২৪ ঘণ্টা কাজ কর্মরত রয়েছে। বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২ লাখ, উত্তর ২৪ পরগনায় ৫০ হাজার, পশ্চিম মেদিনীপুরে ৪০ হাজার ও পূর্ব মেদিনীপুরে ১০ হাজার- অর্থাৎ মোট ৩ লাখ মানুষকে সরিয়ে নিরাপদ আশ্রয় আনা হয়েছে।যেহেতু এই সময় করোনার সংক্রমণের বিপদও রয়েছে তাই সাইক্লোন শেল্টারগুলোতে তার যথাযথ ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমনকি সাইক্লোন শেল্টারগুলিকে স্যানিটাইজও করা হয়েছে। এছাড়া আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত পানীয় জল ও বেবিফুডের ব্যবস্থাও করা হয়েছে।