‘এতগুলো ইস্তফা, পরপর দলত্যাগ, আসল রহস্যটা কী’, এবার দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন বিজেপি নেতা অনুপম হাজরা

আসানসোল ও বালিগঞ্জ, দুই উপনির্বাচন কেন্দ্রেই ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির। বালিগঞ্জে তো জামানত জব্দ হয়েছে গেরুয়া শিবির। সেখানে তৃতীয় স্থানে নেমে গিয়েছে তারা। বামেরা উঠে এসেছে দ্বিতীয় স্থানে। সব মিলিয়ে বিজেপির অন্দরে বেশ হইচই পড়ে গিয়েছে। এমন আবহে রাজ্য শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছেন দলেরই নেতারা। ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে। গত শনিবারই এই নিয়ে রাজ্য নেতৃত্বকে একহাত নিয়েছিলেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। আর এবার দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়ে মুখ খুললেন অনুপম হাজরা।
একের পর এক নেতা-নেত্রীর দলত্যাগ করার বিষয় নিয় রাজ্য নেতৃত্বকে শানিয়েই অনুপম ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। সেখানে তিনি লেখেন, “কেন এতগুলো ইস্তফা একসঙ্গে, সেটা রাজ্য বিজেপির খুব গুরুত্ব সহকারে বিচার-বিশ্লেষণ করা উচিত! আমি যতদূর জানি গৌরীশংকর বাবু একজন ভালো সংগঠক! যাদেরকে এতদিন গুরুত্ব দেওয়া হলো তারা সব দল ছেড়ে চলে গেছে, আর যাঁরা এতদিন মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন, তারা ইস্তফা দিচ্ছেন”!
এখানেই শেষ নয়। তিনি আরও লেখেন, “আর এক শ্রেণীর মানুষ আছে যারা আমার মতো, যারা বঙ্গ-বিজেপির অসময়ে মানে যখন পশ্চিমবঙ্গে মানুষ বিজেপিতে যোগ দিতে ভয় পেত, অর্থাৎ বঙ্গ-বিজেপির সুসময়ে যোগ দেওয়া রাজীব-সব্যসাচী এবং কিছু অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মত জামাই আদর খাওয়া মানুষদের বিজেপিতে আসার অনেক আগে বিজেপিতে যোগদান করে, রাস্তায় নেমে যথেষ্ট পরিমাণে আন্দোলনও করেছিলো, যখন অন্যদের মাঠে নেমে আন্দোলন করতে দেখা যেত না, তৃণমূলের কাছ থেকে যথেষ্ট পরিমাণে পুলিশ কেসও খেয়েছে আর এখন প্রতিনিয়ত দাদা মাঠে নামুন, আপনাদের আর আন্দোলনে দেখা যায় না কেন? শুধু সোশ্যাল মিডিয়াতে লেকচার দিলে হবে? এই ধরনের প্রশ্নের সম্মুখীন হন। কিন্তু তবুও রাজ্য বিজেপি থেকে দূরে, দিল্লিতে বা অন্য রাজ্যে পার্টির কাজ করতেই বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করে! আসল রহস্যটা কী”?
এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে অনুপম বলেন, “মাঝেমধ্যেই দেখি বঙ্গ বিজেপির বিভিন্ন নেতার হতাশা, খারাপ লাগা, স্যোশাল মিডিয়ায় ভেসে ওঠে। আজ সকালে দেখলাম তিনজন নেতা ইস্তফা দিয়েছেন। তার মধ্যে একজন আছেন রাজ্য সম্পাদক গৌরিশঙ্কর বাবু। বাকিদের ব্যাপারে না জানলেও এটা জানি যে গৌরিবাবু মুর্শিদাবাদের মত জায়গায় বিজেপির সংগঠনকে যথেষ্ট শক্তিশালী করেছেন। এই মানুষগুলোর মতন যাঁরা মাটি কামড়ে দলের সংগঠনকে শক্ত করেছেন, তাঁরা ইস্তফা দিলে তা সংগঠনের পক্ষে বড়সড় ধাক্কা”।
উপনির্বাচনের হার নিয়ে গত শনিবারই সৌমিত্র খাঁ বলছিলেন, “অপরিণত রাজনীতিবিদরা মাথার উপরে বসলে ভালো ফলের আশা করাই উচিত না। যাঁদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছিল দল থেকে আমার মনে হয় অবিলম্বে তা প্রত্যাহার করে তাঁদের দলে ফেরানো উচিত এবং সবাই মিলে আবার একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমরা নেতা, বস নই, একথাটা মনে রাখতে হবে”। ফলত, উপনির্বাচন নিয়ে যে বিজেপি অন্দরে বেশ কোন্দল শুরু হয়েছে, তা বেশ স্পষ্ট।