দুর্নীতির জের! ঋণ নিতে গিয়ে নাজেহাল প্রথমিক শিক্ষক, ঋণ মঞ্জুর করতে টেট পাশের নথি খতিয়ে দেখল রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক

টেট থেকে শুরু এসএসসি, নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে এখন গোটা রাজ্য তোলপাড়। নানান ক্ষেত্রে বেআইনিভাবে নিয়োগের খব্রর সামনে আসছে। টেট দুর্নীতির জেরে ইতিমধ্যেই ২৬৯ জন শিক্ষকের চাকরি বাতিল করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। এই মামলায় আদালতের নজরদারিতেই সিবিআই তদন্ত চলছে। তদন্তের জন্য শিক্ষা দফতরের কাছে নানান নথি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু ব্যাঙ্ক ঋণ নিতে গেলেও নথি দেখাতে হবে?
টেট দুর্নীতির জেরে ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া প্রাথমিক শিক্ষকদের নথি দেখতে চেয়ে জেলায় জেলায় প্রশাসনিক নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। তবে এবার এক প্রাথমিক শিক্ষক ব্যাঙ্কে ঋণের জন্য আবেদন করতে গেলে, তাঁর থেকে টেট পাশের নথি চেয়ে বসেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরবঙ্গ ক্ষেত্রীয় গ্রামীণ ব্যাঙ্কে।
সূত্রের খবর, প্রায় সপ্তাহ খানেক আগে আলিপুরদুয়ার-২ ব্লকের একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক তাঁদের সলসলাবাড়ি শাখার ব্যাঙ্কে যান ঋণের জন্য আবেদন করতে। কিন্তু সেই সময় ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের তরফে ওই শিক্ষকের কাছ থেকে তাঁর টেট পাশের নথি দেখতে চাওয়া হয়। ওই শিক্ষকদের পাশের নথি দেওয়ার পরেই তাঁকে ঋণ দেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। তবে এই নিয়ে উপরমহল থেকে কোনও লিখিত নির্দেশ আসেনি বলে জানা যাচ্ছে।
ওই ব্যাঙ্কের সলসলাবাড়ি শাখার ম্যানেজার সুশান্তকুমার মারাক এই ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। এই বিষয়ে তিনি বলেন, “ইতিমধ্যে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে হাই কোর্টের একটি নির্দেশ দিয়েছে। তাতে ২৬৯ জনের চাকরি গিয়েছে। সিবিআই তদন্তও চলছে। তাই কোনও রকম ঝুঁকি না নিয়ে আমরা টেট পাশের নথি দেখে তবেই প্রাথমিক শিক্ষকদের ঋণ দিচ্ছি। অবশ্য এই নিয়ে কোনও লিখিত নির্দেশ আমাদের কাছে এখনও আসেনি”।
অন্যদিকে, আলিপুরদুয়ার জেলার লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার অশোক কুমার বলেন, “এমনটা হয়ে থাকলে তা কেন হচ্ছে, সে ব্যাপারে উত্তরবঙ্গ ক্ষেত্রীয় গ্রামীণ ব্যাঙ্কের সদর দফতরে কথা বলব”।
আবার আলিপুরদুয়ার জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) সুজিত সরকারের এই বিষয়ে বক্তব্য, “ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করব, তাঁরা যেন একটু মানবিকতার সঙ্গে বিষয়টি দেখেন”।