চার পুরসভা নির্বাচনেও হতাশাজনক ফল বিজেপির, রাজ্য নেতৃত্বকে চাঁচাছোলা আক্রমণ জয়প্রকাশ-সৌমিত্রের, টুইটে কটাক্ষ তথাগতর
একুশের নির্বাচনে ভরাডুবির পর কলকাতা পুরভোটেও হতাশাজনক ফল হয় বিজেপির। তৃতীয় স্থানে চলে যায় দল। এবার চার পুরসভা অর্থাৎ বিধাননগর, আসানসোল, চন্দননগর, শিলিগুড়িতেও ধরাশায়ী বিজেপি। এই চার পুরসভায় ভরাডুবির পরই এবার দলের মধ্যেও শুরু হয়েছে অশান্তি। একে অপরকে তোপ দাগতে শুরু করেছেন নেতারা।
নিচুতলায় দলের সংগঠনের হাল এমনিতেই তলানিতে। মাঠে নেমে লড়াই করার ক্ষমতা নেই পদ্ম শিবিরের। আর তা এই চার পুরসভায় নির্বাচনের ফলেই যে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে, তা বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতাদের একাংশই স্বীকার করে নিয়েছেন।
রাজ্য সহ-সভাপতি তথা বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁর বক্তব্য, “সংগঠনের দুর্বলতা আছে, এটা স্বীকার করতে হবে। ছোট ছোট ভোটে (পুরসভা-পঞ্চায়েত) লড়াইয়ের যোগ্যতা অর্জন করতে পারিনি আমরা”।
আসানসোল-শিলিগুড়ির মতো জায়গাতেও এত খারাপ ফল কেন? এর জবাবে দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “এখানে আমরা ভাল ফলের আশা করেছিলাম। কেন সেখানে এতটা খারাপ হল সেটা বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে”। এদিকে আবার দলের বিক্ষুব্ধ নেতা রীতেশ তিওয়ারি থেকে শুরু করে জয়প্রকাশ মজুমদাররা পুরভোটে দলের এই ফলাফলের জন্য রাজ্য বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর ব্যর্থতাকেই সরাসরি দায়ী করেছেন।
এই বিষয়ে জয়প্রকাশ মজুমদার তোপ দেগে বলেন, “অসহায় রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, ভাচুর্য়াল চক্রবর্তী নাকি টুইটার মালব্য, কে পদত্যাগ করবেন এই ফলাফলের দায় নিয়ে”।
অন্যদিকে রীতেশ তিওয়ারির বক্তব্য, “এই ফলের জন্য দিলীপ ঘোষ-কৈলাস বিজয়বর্গীয়-সহ কেন্দ্রীয় নেতারা বা দিল্লি নয়। বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারেরও সেরকম ভূমিকা ছিল না। ভার্চুয়াল চক্রবর্তী ও তার কিছু অনুচর দায়ী এই ফলের জন্য। কারণ পুরভোট পরিচালনা ও সমস্ত কর্মকাণ্ড টিম অমিতাভ চক্রবর্তীই করেছিল”।
পুরভোটে বিজেপি চন্দননগর থেকে ভোট পেয়েছে ১০ শতাংশ, আসানসোলে পেয়েছে ১৭ শতাংশ, শিলিগুড়িতে ২৩ শতাংশ ও বিধাননগরে মাত্র ৮ শতাংশ। বিজেপির এই হতাশজনক ফলাফলের কারণে দলের মধ্যে একে অপরকে দোষারোপ করা শুরু হয়ে গিয়েছে। রাজ্য বিজেপির বিদ্রোহী নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারের কথায় বাংলার বিজেপি হয় এখন কোর্টে আর না হয় রাজভবনে। তিনি এও বলেন যে বিজেপির সঙ্গে সংগঠন নেই, মানুষ নেই, কর্মীও নেই। টাকা খরচ করলেই শুধু ভোট হয় না।
এদিকে সব্যসাচী দত্তের উদাহরণ টেনে ফের কৈলাস বিজয়বর্গীয়-সহ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের তোপ দেগে টুইট করেছেন তথাগত রায় । তিনি লেখেন, “সব্যসাচী দত্ত বলেছেন, কে চেয়ারে বসবেন তা খুব বড় নয়। আমি জানি আসল মেয়র’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সব লোকেদের নিয়ে KDSA gang ধেই ধেই করে নেচেছিল।আর ১৯৮০-র দশক থেকে পার্টি করে আসা কার্যকর্তাদের বলা হয়েছিল, আপনারা এতদিন কি …”? ছাপার অযোগ্য ভাষায় আক্রমণ শানান বিজেপি নেতা।
সব্যসাচী দত্ত বলেছেন, “কে চেয়ারে বসবেন তা খুব বড় নয়। আমি জানি ‘আসল মেয়র’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়”।
এই সব লোকেদের নিয়ে KDSA gang ধেই ধেই করে নেচেছিল। আর ১৯৮০-র দশক থেকে পার্টি করে আসা কার্যকর্তাদের বলা হয়েছিল, “আপনারা এতদিন কি ছিঁ__ন”? ঠিক এই ভাষাতেই।
কি, আমি বানিয়ে বলছি ?
— Tathagata Roy (@tathagata2) February 15, 2022
তবে পুরভোট নিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দাবী, “এই পুরসভাগুলিতে যেভাবে ভোট হয়েছে কোনওভাবেই তা বিশ্লেষণ করা সম্ভব নয়। এটা প্রহসনের ভোট”।