জোরপূর্বক জমি অধিগ্রহণ রুখতে দেউচা-পাঁচামিতে মিছিল শুভেন্দু-সুকান্তদের, আদিবাসীদের অনিচ্ছায় জমি নিলে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ঘোষণা বিজেপির
রাজ্যের শিল্প টানতে মরিয়া রাজ্য সরকার। চলতি বছরের বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলনে দেউচা-পাঁচামিতে কয়লা শিল্প নিয়ে বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেউচা-পাঁচামিতে মিলেছে কয়লার সন্ধান। সেই কারণে সেখানে কয়লা খনি করার পরিকল্পনা করছে রাজ্য।
কয়লা শিল্প তৈরি করতে সেখানকার আদিবাসীদের থেকে জমি নেওয়ার পরিকল্পনা চলে। রাজ্য সরকারের তরফে আদিবাসীদের পুনর্বাসন দেওয়ার কথা জানানো হয়। এখানে কয়লা শিল্পের জন্য আদিবাসীদের জন্য ১০ হাজার কোটি টাকার পুনর্বাসনের ঘোষণা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কিন্তু নিজেদের জমি ছাড়তে নারাজ আদিবাসীরা। তাদের কথায়, সরকারের উপর তাদের আস্থা নেই। সরকার যে পুনর্বাসনের কথা বলছে, তা আদৌ তারা পাবেন কী না, সে নিয়ে সন্দিহান তারা। তাছাড়া নিজেদের পূর্বপুরুষের জমি কোনওমতেই হাতছাড়া করতে রাজি নন তারা।
এই নিয়ে শুরু হয় বিজেপি-শাসকদল দ্বন্দ্বও। বিজেপির তরফে দাবী করা হয় যে রাজ্য সরকার জোরপূর্বক আদিবাসীদের থেকে তাদের জমি অধিগ্রহণ করতে চাইছে। তা তারা কোনওমতেই হতে দেবেন না। এই নিয়ে আদিবাসীদের সঙ্গে কথা বলতে ও তাদের পাশে দাঁড়াতে আগেও দেউচা-পাঁচামি গিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
এরপর আজ, বৃহস্পতিবার সরকারের জোরপূর্বক জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে দেউচা-পাঁচামিতে মিছিল করেন শুভেন্দু অধিকারী ও সুকান্ত মজুমদাররা। তবে এদিন বিজেপির এই মিছিলের আগেই গ্রামে বিক্ষোভ দেখান আদিবাসী সংগঠন। তাদের কথায়, এই জমি মামলায় তারা কোনও রাজনৈতিক রঙ চান না। এই কারণে শুধু বিজেপিই নয়, তারা কোনও রাজনৈতিক দলকেই প্রবেশ করতে দেবেন না গ্রামে।
তবে এদিন বিজেপি মিছিল কের গ্রামের বাইরেই। মিছিলের শেষে হয় একটি জনসভাও। সেই সভা থেকে বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে নাম না করেই তোপ দাগেন শুভেন্দু। তিনি এও বলেন, “দেউচা ক্লোজড চ্যাপ্টার। জোরপূর্বক সরকার যদি এই জমি অধিগ্রহণ করতে চায়, তাহলে আন্দোলন হবে। আর আন্দোলন কাকে বলে সেটা সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম থেকে সবাই জেনে গিয়েছে”।
অন্যদিকে, এদিনের মিছিল থেকে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “কয়লা রয়েছে মাটির প্রায় ২ কিলোমিটার নীচে। তার উপরে রয়েছে পাথর। সরকার সেই পাথর বিক্রি করে ব্যবসা করতে চায়। এই নিয়ে কথাবার্তাও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আদিবাসীদের এই কষ্টের জমি কোনওভাবেই আমরা অধিগ্রহণ করতে দেব না সরকারকে”।