Dilip attacks Mamata: সেয়ানে-সেয়ানে! নিজের বাড়িতে পাঞ্জাবি বউ এনেছেন, সে বহিরাগত নয়? মমতাকে প্রশ্ন দিলীপের

নিবেদিতাকে আমরা সিস্টার বলি, টেরেজাকে আমরা মাদার বলি। বিদেশ থেকে এসেছেন এমন মানুষকে আমরা মাদার – সিস্টার বলেছি। আর দিদিমণি ভারতবর্ষের মানুষকেই বলছেন বহিরাগত? বিভিন্ন যুক্তি দিয়ে আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বহিরাগত তত্ত্বকে জবাব দিলেন বিজেপির প্রদেশ অধ্যক্ষ দিলীপ ঘোষ।
সোজা ব্যাটে খেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন অভিযোগকে বাউন্ডারি পার করলেন তিনি। এমনিতেই যখন লক্ষ্মীরতন শুক্লা পরবর্তী হাওড়ার অবস্থা টালমাটাল তখনই আজ মঙ্গলবার হাওড়ার আমতায় এক জনসভায় দিলীপবাবু বলেন, ‘বহিরাগত’ তত্ত্ব খাড়া করে বিভাজনের রাজনীতি করছেন দিদিমণি। সঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, পঞ্জাবি বউমা সোনা আনে বলে কি সে বহিরাগত নয়?’
আজকে সকালেই দিল্লি থেকে ফিরেছেন দিলীপ, তারপরই বিবেকানন্দের জন্ম জয়ন্তী উপলক্ষে পদযাত্রায় সামিল হয়েছেন, আর তারপরই বিকেলের এই সভা। সেখানেই কার্যত বাক্য বিস্ফোরণ ঘটালেন বঙ্গ বিজেপি সভাপতি। বহিরাগত প্রসঙ্গে তৃণমূলকে একহাত নিয়ে তিনি বলেন, ‘গুজরাত থেকে এসে অমিত শাহ, মোদীজি ভোটে জেতালে বহিরাগত, আর বিহার থেকে এসে ভোটে জেতালে তিনি বহিরাগত নয়? নিজের বাড়িতে পাঞ্জাবি বউ নিয়ে এসেছেন সেটা বহিরাগত নয়? কেনও সোনা নিয়ে আসে, সেইজন্য না কি? আমাদের কার্যকর্তারা আসছেন, কৈলাসজি, শিবপ্রকাশজি, তাঁরা বহিরাগত হয়ে যাচ্ছেন।’
এরপরই বিশ্লেষণ করে দিলীপ ঘোষ হাওড়া বাসীকে বোঝান ভিন প্রদেশ ও ভিন ভাষার মানুষ কী ভাবে বাঙালিকে গ্রহণ করেছে।
এদিনের ভাষণে নিজের বক্তব্যে দিলীপবাবু বলেন, ‘পশ্চিমবাংলায় বসে জাতীয় সংগীত লিখেছেন রবীন্দ্রনাথ, বন্দেমাতরম লিখেছেন বঙ্কিমচন্দ্র। সারা দেশের মানুষ গ্রহণ করেছে। এখানকার বিপ্লবীরা সারা দেশে গিয়ে বিপ্লব করেছেন। আমাদের রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম সংঘের সন্ন্যাসীরা সারা দেশে গিয়ে মঠ প্রতিষ্ঠা করেছেন। সারা দেশের লোক সম্মানের সঙ্গে গ্রহণ করেছে। এই লক্ষ লক্ষ শ্রমিক বাইরে গিয়ে কাজ করছে, কেউ একবার বলেনি বাঙালিদের বহিরাগত। বিহার, উত্তর প্রদেশ থেকে যে শ্রমিকরা এসে পশ্চিমবাংলাকে তৈরি করেছিল, তাদের বলছে বহিরাগত?’
একইসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বহিরাগত তত্ত্ব ঠিক কতটা ঠুনকো তা স্মরণ করিয়ে বিজেপির প্রদেশ অধ্যক্ষ বলেন, ‘বিড়লা, গোয়েঙ্কা, জিন্দল, মিত্তল এঁরা এখানে কারখানা তৈরি করেছে বলে আজ চাকরি পেয়েছে লোকে। তারা বহিরাগত হয়ে গেল আজ?
একইসঙ্গে আশঙ্কার কথাও শোনা গেছে আজ তাঁর গলায়, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর মুখে বহিরাগত তত্ত্ব বাঙালিকেই বিপদে ফেলবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, ‘এই কথা শুনে যদি অন্য রাজ্যের ছেলেরা বাঙালি ছেলে-মেয়েদের যাঁরা বাইরে কাজ করে তাঁদের বহিরাগত বলা শুরু করে… ৪০ লক্ষ যুবক যদি রাজ্যে ফিরে আসেন। কাজ, রেশন দিতে পারবেন দিদিমণি?’
এরপরই মমতার বিরুদ্ধে অভিযোগের সুরে দিলীপ বলেন আপনি পারেন না তাই খালি ঝামেলা বাঁধিয়ে দেন। পাহাড়ে গিয়ে বাঙালি, গোর্খা লড়াই বাঁধিয়ে দিয়েছেন। উত্তরবঙ্গে রাজবংশী আর বাঙালি করে দেন, এখানে মতুয়া আর উচ্চবর্ণ করে দেন। জঙ্গলমহলে গিয়ে আদিবাসী, বাঙালি লড়াই লাগিয়ে দেন।’
আজকের সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভাজনের রাজনীতি বন্ধ করার ও তাঁকে গদিচ্যুত করার ডাক দেন দিলীপ ঘোষ।