প্রায় দেড় বছর বন্ধ ভুটান সীমান্ত, খাঁ খাঁ করছে চামুর্চি বাজার, রোজগার বন্ধ, ক্ষোভপ্রকাশ ব্যবসায়ীদের
বাজারে বিক্রি যা হত, তা দিয়েই তাদের সংসার ভালোভাবেই চলে যেত। কিন্তু অতিমারিতে সব বন্ধ। সর্বস্ব কেড়েছে অতিমারি। এই নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন ভুটান সীমান্তবর্তী চামুর্চির ব্যবসায়ীরা।
তাদের অভিযোগ, দেশে প্রথম করোনা রোগীর হদিশ মিলতেই সীমান্ত বন্ধ করে দেয় ভুটান সরকার। এর প্রায় ১৬ মাস হতে চলল কিন্তু এখনও চলছে লকডাউন। এর জেরে ব্যবসা বন্ধ। অনেকেই উপায় জনা দেখে ব্যবসার ঝাঁপ ফেলেছে। অনেকে এখনও বিক্রির আশায় বসে থাকে, কিন্তু ওই বসে থাকাই সার, ক্রেতা নেই। নানান মালপত্রের মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ায় তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, ফল বস্তা বস্তা জিনিস ফেলে দিতে হচ্ছে। কোটি কোটি টাকার লোকসানের মুখে পড়েছে ব্যবসায়ীরা।
জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি জেলার অন্তর্গত এই চামুর্চি এলাকা। এটাই ভুটানে ঢোকার প্রবেশপথ। এতদিন এখান দিয়েই বাংলায় ব্যবসা বাণিজ্য হত। রাজ্য বা দেশের তুলনায়, চামুর্চি বাজার ভুটানের উপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। কিন্তু করোনার কোপ পড়েছে এবার সেই এলাকায়। প্রায় ১৫০ জন ব্যবসায়ী রীতিমতো মাছি তাড়াচ্ছেন।
চামুর্চিতে এখনও সম্পূর্ণ লকডাউন চলছে। এর উপর ভুটান সীমান্ত সম্পূর্ণ বন্ধ থাকায় মানুষের আনাগোনা নেই, তাই বিক্রিবাটাও নেই। অনেক ব্যবসায়ীরাই নিজেদের ব্যবসা তুলে অন্য রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন কাজের সন্ধানে। প্রায় ৭০ শতাংশ ব্যবসায়ীই ঘরছাড়া বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন- দিল্লি সফর থেকে ফিরেই উত্তরবঙ্গে সফরে যাচ্ছেন রাজ্যপাল, রাজ্য রাজনীতিতে তৈরি চাপানউতোর
এই বিষয়ে এক ব্যবসায়ী বলেন, “লকডাউন এর প্রভাবে দীর্ঘদিন বন্ধ ভুটান সীমান্ত। যে কারণে ব্যবসা-বাণিজ্যও বন্ধ। গাড়ি চলাচলও সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। তার ফলে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি গাড়িচালকরাও মার খাচ্ছেন। এখানকার মানুষ ঠিকমতো খেতেও পাচ্ছেন না। প্রশাসন যদি কোন সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ করেন তাহলে নিষ্কৃতী মেলে”।
করোনা সংক্রমণের গ্রাফ কিছুটা নিম্নমুখী হওয়ায় রাজ্যে লকডাউন কিছুটা শিথিল করেছে সরকার। দোকান- বাজার খোলার ক্ষেত্রে নানান নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভুটান সরকার এখন কোনওভাবেই সীমান্ত খুলতে চায় না। এর জেরে মহা সংকটে পড়েছেন চামুর্চি বাজারের ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবী, এই পরিস্থিতি ঠিক করতে সরকার দায়িত্ব নিক। দরকার হলে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। এভাবে বিনা রোজগারে কতদিন বাঁচা সম্ভব।