হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে চরম ভর্ৎসনার মুখে শিক্ষা পর্ষদ, ৫৮ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চয়তার দিকে

সিঙ্গল বেঞ্চের পর এবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চেও ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। টেট নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে ইতিমধ্যেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। অপসারণ করা হয়েছে পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যকে।
সিঙ্গল বেঞ্চের সেই নির্দেশকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করে শিখা পর্ষদ। আজ, শুক্রবার বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি লপিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। তবে এবারও ডিভিশন বেঞ্চে মুখ পুড়ল পর্ষদের।
আদালতের কাছে অভিযোগ ছিল, ২৩ লক্ষ প্রার্থীর মধ্যে শুধুমাত্র ২৭৩ জনকে বাড়তি এক নম্বর দেওয়া হয়েছিল। এদিন ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন করে যে পর্ষদ কীসের ভিত্তিতে ওই ২৭৩ জনকে বেছেছিল? বেঞ্চের পরের প্রশ্ন, প্রশ্ন ভুল থাকার জন্য যখন পরীক্ষার্থীদের বাড়তি এক নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, তখন সমস্ত পরীক্ষার্থীকে সেই নম্বর দেওয়া হয়নি কেন? কিন্তু আদালতের এই প্রশ্নের কোনও উত্তর দিতে পারেনি পর্ষদ।
এদিন বিচারপতিরা পর্ষদের কাছে সরাসরি জানতে চান, “প্রশ্ন যদি ভুল থেকে থাকে তবে কৃতকার্য এবং অকৃতকার্য – সব প্রার্থীদেরই এক নম্বর করে বাড়ানো উচিত ছিল কী না? কেন এই বৈষম্য করা হয়েছে”? এই প্রশ্নের উত্তরে পর্ষদের আইনজীবীরা বলে ন যে আইন মেনে শুধুমাত্র প্রশিক্ষিত প্রার্থীদেরই বাড়তি নম্বর দেওয়া হয়েছে।
এরপরই আদালত পাল্টা প্রশ্ন করে যে কোথাও কী এমন নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে যারা ওই প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়েছেন না দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, শুধুমাত্র তাদেরই নম্বর দেওয়া হবে? তবে এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর পর্ষদ দিতে পারেনি।
২০১৪ সালের টেট পরীক্ষায় যারা পাশ করে চাকরি পেয়েছেন তাদের নথি চেয়ে পাঠানো হয়েছে। সব মিলিয়ে নিয়োগ করা শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৫৮ হাজার। এখন প্রশ্ন উঠছে, যে পাশ করা শিক্ষকদের নথি দেখে কী তাহলে নতুন মেধাতালিকা বের করা হবে? আর যদি সকলকেই এক নম্বর বাড়তি দেওয়া হয় বা যাদের দেয়া হয়েছে, তাদের এক নম্বর কেটে নেওয়া হয়, তাহলে কী এই সাড়ে ৫৮ হাজার শিক্ষকের ভবিষ্যৎ এক অনিশ্চয়তার দিকে চলে যাবে না?